বর্ষার মরশুমে নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানে ফের বাঘের উপস্থিতির খবরে উৎসাহ ছড়িছে গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগে। ফাঁদ ক্যামেরায় বাঘের ছবি উঠলেও, পাহাড়ি এলাকায় ক্রমাগত বৃষ্টির কারণে সব ক্যামেরা উদ্ধার করা এখনই সম্ভব হচ্ছে না। যে কটি ক্যামেরা উদ্ধার করা গিয়েছে, তাতে নেওড়াভ্যালির বিভিন্ন জায়গায় মে মাস পর্যন্ত বাঘের চলাফেরার প্রমাণ মিলেছে। বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গেলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেই ছাপ সম্পূর্ণভাবে উদ্ধার করা যায়নি।
বন বিভাগের ডিএফও দ্বিজপ্রতিম সেন জানিয়েছেন, “নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যান সিকিম এবং ভুটানের পাদদেশের সঙ্গে সংযুক্ত। তবে বর্ষার কারণে প্রচুর বৃষ্টি ও হালকা ভূমিধসের কারণে ট্র্যাপ ক্যামেরাগুলি উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত কয়েকটি ক্যামেরা উদ্ধার করা গিয়েছে এবং তাতে বাঘের ছবি রয়েছে। তবে কোন এলাকায় এবং ক’টা বাঘ রয়েছে তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।”
কালিম্পংয়ের জঙ্গলে মিলল বিরল প্রজাতির বনবিড়াল, পশ্চিমবঙ্গে প্রথম বার
২০১৭ সালে প্রথম নেওড়াভ্যালিতে এক গাড়ির চালক আনমোল ছেত্রী বাঘের ছবি তুলে বন দফতরের নজরে আনেন। এরপর থেকে নেওড়াভ্যালির পাহাড়ি অঞ্চলে ফাঁদ ক্যামেরা বসানো শুরু হয়, যা থেকে ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাঘের অনেক ছবি পাওয়া গিয়েছে। এবছর মে মাস পর্যন্তও বাঘের ছবি উঠেছে। তবে টানা বৃষ্টির কারণে ক্যামেরা থেকে সমস্ত ছবি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
নেওড়াভ্যালির এই অঞ্চলটি সিকিম, ভুটান এবং নেওড়ার জঙ্গল নিয়ে তৈরি ট্রাই জংশন করিডরের অংশ। শীতকালে ভুটান এবং সিকিম থেকে বাঘ নিচু এলাকায় নেমে আসে, এবং তখন ট্র্যাপ ক্যামেরায় বাঘের চলাফেরার ছবি ধরা পড়ে। তবে বর্ষাকালে পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টির কারণে ক্যামেরার ছবির মান কিছুটা খারাপ হয়, কিন্তু বন দফতর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সমস্ত ছবি পুনরুদ্ধারের জন্য।
বন দদফতরের কর্মকর্তারা আশাবাদী, আবহাওয়ার উন্নতি হলে আরও ছবি সংগ্রহ করা সম্ভব হবে এবং নেওড়াভ্যালিতে বাঘের বর্তমান অবস্থান ও সংখ্যা সম্পর্কে আরও সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।