বিপ্লবতীর্থ চন্দননগরে বিবেকানন্দ স্মৃতি মন্দির

গঙ্গার পশ্চিম পাড় ফরাসি উপনিবেশ ঘাঁটি চন্দননগর। ফরাসি অধিকারের জন্য শহরের নাম সেকালে হয় ফরাসডাঙ্গা। ফরাসি উপনিবেশ হওয়ার কারণে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বহু বিপ্লবীরা এখানে এসে আশ্রয় নেয়। সেই সময় এখানে কোন অস্ত্র আইন ছিল না। তাই খুব সহজে বিপ্লবীরা এই জায়গাটিকে ঘাঁটি হিসেবে বেছে নেয়।

চন্দননগর স্ট্র্যান্ড ঘাট

স্ট্র্যান্ড ঘাটের পাশে ফরাসি গভর্নর ডুপ্লের বাসস্থানের ঠিক উল্টোদিকে গঙ্গা পাড়ে আছে একটি মন্দির। নাম বিবেকানন্দ মন্দির। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় চন্দননগরে স্বামীজির স্মৃতিতে। স্বামীজির আবক্ষ মূর্তি রয়েছে। চন্দননগরে স্বামীজি জাতীয়তাবাদী বিপ্লবের মশালে আগুন জ্বালান। তিনি চন্দননগরের মধ্যে দিয়ে ভারতে অস্ত্র প্রবেশ করাতেন। অগ্নিযুগে বাগবাজারে ভগিনী নিবেদিতার বাড়িতে গুপ্ত সমিতির একটি কেন্দ্র হয়। নিবেদিতা এঁকে দিয়েছিলেন বিপ্লবী ভারতের জাতীয় পতাকা। ভগিনী নিবেদিতা বলেন,

“পুলিশ গোয়েন্দা মারফত স্বামীজীর উপর নজর রাখছে। এবার মশালে আগুন জ্বলবে। সেই আগুন ছড়াবে সারা দেশে।”

স্বামীজির দুই শিষ্যা জোসেফিন ম্যাকলাউড ও ভগিনী নিবেদিতা

স্বামীজীর আরেক শিষ্যা জোসেফিন ম্যাকলাউড জানিয়েছিলেন অস্ত্র বোঝাই একটি নৌকা ধরা পড়ে। নৌকাটি অস্ত্রসহ চন্দননগরে আসছিল। স্বামীজি অস্ত্র নিয়ে আসছিলেন। তাই অধ্যাপক কামাখ্যানাথ মিত্রকে একবার স্বামীজি বলেন,

“ভারতের প্রয়োজন এখন বোমা।”

“দেশকে জাগিয়ে তোলা ছাড়া আর আমার অন্য কোন কামনা নাই, দেশের প্রাণ ঘুমিয়ে আছে, আত্মশক্তিতে কোন ই আস্থা নাই….”। প্রিয় শিষ্যাদের তিনি এ সংক্রান্ত বহু চিঠি লেখেন।

চন্দননগরে বিপ্লবী উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, মতিলাল রায়, শ্রীশচন্দ্র ঘোষ, কানাইলাল দত্ত প্রমুখরা স্বামীজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হন।

বিবেকানন্দ মন্দির কিভাবে যাবেন : হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে সরাসরি চন্দননগর। সেখান থেকে টোটো নিয়ে চলে আসুন স্ট্র্যান্ড। ঘাটের পাশেই এই মন্দির।

দর্শন : ভক্তদের জন্য মন্দিরটি সারাদিন খোলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *