কলকাতাকে চিনুন: প্রাচ্যবিদ জেমস লং সাহেবের গির্জা

ভ্রমণ অনলাইন ডেস্ক: সে কালের মির্জাপুর আজকের আমহার্স্ট স্ট্রিট। বর্তমান ঠিকানা ৩৩ বি, রামমোহন সরণি। মধ্য কলকাতার এখানেই রয়েছে সেই গির্জা অনেকের কাছেই যা অজানা। এখানেই তৈরি হয়েছিল এক ইতিহাস। স্থানীয় মানুষজন বলে থাকেন লং সাহেবের গির্জা।

গির্জার নাম ‘হোলি ট্রিনিটি চার্চ’। ১৮২৬ সালে আর্চডিকন কোরি গির্জার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। গির্জাটি ছিল প্রোটেস্ট্যান্ট সম্প্রদায়ের। বহু বাঙালি খ্রিস্টানের আনাগোনা ছিল এই গির্জায়।

কলকাতায় এককালে মিশনারি ও কিছু সাহেব সমাজকে সংস্কারের ভূমিকা নেয়। এঁদের মধ্যে অন্যতম জেমস লং। এঁদের মূল লক্ষ্য ছিল সামাজিক উন্নতিসাধন। হিংসা বিদ্বেষ নয়, ধর্মপ্রচারে ব্রতী হন। বহু বাঙালি খ্রিস্টীয় ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

তবে বাঙালি খ্রিস্টানদের ইংরেজি ভাষায় প্রার্থনা ও গ্রন্থপাঠ বেশ সমস্যায় ফেলে। বাংলা ভাষায় গ্রন্থপাঠ প্রথম এই গির্জায় শুরু হয়েছিল।

জেমস লং সাহেব দীর্ঘদিন এই গির্জাতে ছিলেন। এখান থেকে তিনি সিপাহী বিদ্রোহ ও নীল বিদ্রোহে সাহেবদের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন। দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটকের অনুবাদ করেছিলেন লং সাহেব।

গির্জায় এসেছিলেন মথুরবাবুকে সঙ্গে করে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেব। শোনা যায় গির্জা ঘুরে তিনি ভাবসমাধিস্থ হন। গির্জাটি আজ বিস্মৃতির অতলে। একবার সেই গির্জা ঘুরে এলে কলকাতার অমূল্য ইতিহাসে ফিরে যাওয়া যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top