বোলপুরের কাছেই গুপ্ত, পাল, সেন প্রভৃতি আমলের নিদর্শন! যেন এক সংগ্রহশালা, পর্ব ৪

পর্ব ৪

মুকুট তপাদার

ভারত তপস্বীর দেশ। তাদের শক্তির মধ্যেই থাকে ঈশ্বরের মহিমা। আমাদের দেশনায়কও শৌলমারির সাধু বা ভগবানজী হয়ে জীবনের শেষ সময় ছিলেন শোনা যায়। যাইহোক, সারাদেশের তপস্বী ও ভক্তরা পৌষ পূর্ণিমায় মকর সংক্রান্তির দিন পূণ্যস্নান করেন। দিনটি অত্যন্ত পবিত্র।

মকর সংক্রান্তিতে শ্রী শ্রী লোচন দাস ঠাকুরের আবির্ভাব তিথি। চৈতন্যজীবনীকার লোচন দাস ছিলেন মধ্যযুগের বৈষ্ণব কবি। অজয় নদের পাড়ে বসে তিনি চৈতন্যদেবের জীবনী লিখে গেছেন। এই অজয় নদে মকর সংক্রান্তির দিন ভক্তরা পূণ্যস্নান করেন।

লোচন দাস শ্রীচৈতন্যমঙ্গল রচনা করেন। তার আগে বা পরে সকল কবি চৈতন্যদেবকে ঈশ্বরের স্বরূপ হিসেবে দেখিয়েছিলেন। কিন্তু লোচন দাস চার খন্ডে মহাপ্রভুর মানবিক যাত্রাকে কাব্যে ফুটিয়ে তোলেন। ভক্তি প্রসারে কীর্তনের অবদান উঠে আসে। মহাপ্রভুর সহধর্মিনী বিদুষী নারী বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর কাহিনীও কাব্যে আলোচিত হয়।

অজয় নদের পাড়ে দেউলী গ্রামে আছে লোচন দাস প্রভুর সিদ্ধাসন। তিনি এখানে বসেই তাঁর গুরু নরহরি সরকারের নির্দেশে চৈতন্যমঙ্গল রচনা করেন। বিষয়টি অনেকেরই অজানা। চার খন্ডে নবদ্বীপ লীলা, শ্রীচৈতন্যর দেশ ভ্রমণ, নীলাচলের কাহিনী রচিত হয়। এখানে বেশকিছু প্রাচীন ভাস্কর্য আছে। যেগুলো অনুমান করা হয় প্রায় ৯ম থেকে ১২শ শতাব্দীর সময়কার।

অজয় নদের কাছেই জায়গাটি শান্ত পরিবেশ। সময় কাটানোর জন্য আপনার বেশ পছন্দ হতে পারে। সিদ্ধাসনটি দৃশ্যত গাছ গাছালি ও মন্দির ঘেরা স্নিগ্ধ পরিবেশে। লোচন দাস প্রভুর সিদ্ধাসন দেখে ভক্তদের চৈতন্য হোক।

কিভাবে যাবেন :
শিয়ালদহ বা হাওড়া থেকে ট্রেনে বোলপুর। সেখান থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে দেউলী গ্রাম। বোলপুর থেকে টোটো বা গাড়ি বুক করে ঘুরে নিন।

(চলবে)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top