ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: কাঞ্চনজঙ্ঘাকে সব থেকে ভালো ভাবে উপভোগ করতে হলে, পশ্চিমবঙ্গের কোথায় যাওয়া উচিত? বেশির ভাগেরই উত্তর হবে সান্দাকফু। নিঃসন্দেহে, সান্দাকফুর মতো কাঞ্চনজঙ্ঘা হয়তো এ রাজ্যে আর কোথাও দেখা যায় না। পুরোপুরি সম্মান দিয়েও বলা যায়, দার্জিলিং থেকেও নয়।
কিন্তু সান্দাকফু কি সবার পক্ষে যাওয়া সম্ভব? মানে ধরুন যাঁরা এখন বয়সে প্রৌঢ়ত্ব পেরিয়ে বৃদ্ধ হওয়ার দিকে, অথচ ভ্রমণের ইচ্ছা এখনও ষোলো আনা! ল্যান্ডরোভারের ধকল তাঁদের অনেকেরই হয়তো সহ্য হবে না। তা হলে কোথায় যাওয়া যায় বলুন তো!
চিন্তার কী আছে? ধোতরে আছে তো।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা ছোট্ট একটা গ্রাম যার বাসিন্দা সাকুল্যে ৩০টি পরিবার। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে সাজানো প্রতিটি বাড়ির চাল সবুজ রঙের টিন দিয়ে ঢাকা, যার জন্য এই গ্রামের আরেক নাম ‘গ্রিন ভিলেজ’। সব বাড়ির সামনে একচিলতে জমিতে গাজর, বিন, মটরশুঁটি, আলু আর কপির চাষ হচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে যত দূর চোখ যায় আকাশচুম্বী পাইনগাছের ঘন বন। পাখির কলতান তো রয়েছেই।
ধোতরের উচ্চতা সমুদ্রতল থেকে সাড়ে আট হাজার ফুট। ফলে ভরা শীতে ধোতরেতে তুষারপাতের অভিজ্ঞতাও সঙ্গী হতে পারে আপনার। গত মরশুমেই এই ধোতরেতে বার পাঁচেক তুষারপাত হয়েছে।
![](https://www.bhramononline.com/wp-content/uploads/2019/09/dhotrey-snow.jpg)
কী আছে এই ধোতরেতে? এখানে আছে অপরিসীম নির্জনতা, সরল একটা হাসি নিয়ে স্থানীয় হোমস্টের বাসিন্দাদের নির্ভেজাল আতিথেয়তা আর সেই সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
আরও পড়ুন নরেন্দ্র মোদীর চা স্টল হবে পর্যটনস্থল
সূর্যোদয়ের আগেই উঠে পড়ুন ঘুম থেকে। হোমস্টের ছাদে চলে যান, বা একটু দূরে অবস্থিত ভিউ পয়েন্টটায়। ধীরে ধীরে উপভোগ করুন কাঞ্চনজঙ্ঘার ওপরে রঙের খেলা। মনে হবে স্বয়ং বুদ্ধদেব আপনার সামনে শুয়ে রয়েছেন। এর পর গ্রামে একটু হাঁটাহাঁটি করে নিন, কাছের মনাস্ট্রি থেকে ভেসে আসা ‘ওম মণি পদ্মে হুঁম’ বা মন্দিরের মঙ্গলারতির ঘণ্টাধ্বনি শুনতে শুনতে।
উল্লেখ্য, সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানের ঠিক বাইরেই অবস্থিত এই ছোট্ট গ্রাম ধোতরে। সান্দাকফুর ট্রেকিং অনেকে এই ধোতরে থেকেও শুরু করেন। আর যাঁরা শুধুমাত্র ধোতরেকেই উপভোগ করতে চান, তাঁরা এখান থেকে ট্রেক করে টুমলিং পর্যন্ত ঘুরে আসতে পারেন।
তা হলে কী ভাবছেন দু’দিনের জন্য যাবেন না কি ধোতরেতে, পুজোর ছুটিতে না হলেও শীতের ছুটিতে!
কী ভাবে যাবেন
কলকাতা হোক, বা দেশের যে কোনো প্রান্ত, আপনাকে আগে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন বা বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছোতে হবে। এখান থেকে আপনার যাত্রা শুরু। বিমানবন্দর বা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গাড়ি পেয়ে যাবেন। আর যদি হোমস্টেগুলোকে আগে থেকে জানিয়ে রাখেন, তা হলেও গাড়ির ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এনজেপি বা বাগডোগরা থেকে ধোতরের দূরত্ব ১০০ কিমির আশেপাশে। ট্রেনের বিস্তারিত তথ্যের জন্য দেখে নিন erail.in ।
কোথায় থাকবেন
ধোতরেতে থাকার জন্য বেশ কিছু হোমস্টে রয়েছে। সেগুলি হল, (১) পদ্মা হোমস্টে (০৮৭৬৮৮৭৩১২১), (২) শেরপা লজ (০৯৮৮৩৯৪৬৮৮০), (৩) বিদ্যা সাগর হোমস্টে (০৮৪২০৪৮০৭৫৯), (৪) অর্কিড ডেল হোমস্টে (০৯৯৩৩০৪৩০৫১) ইত্যাদি।