উৎসবমেলা

হুগলির ত্রিবেণীতে ৭০২ বছর পর কুম্ভমেলা

উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে কুম্ভের শাহী স্নান শুরু হয়েছে। পর্যটকদের বড় আকর্ষণ। এবার বাংলার কুম্ভ নিয়েও হুগলির ত্রিবেণী আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।

ভাগবত পুরাণে বলা হয়েছে পুলস্ত্য মুনি হলেন একজন ঋষি। তিনি ব্রহ্মার দশ মানসপুত্রদের একজন। মহাভারতের বনপর্বে পুলস্ত্য মুনি ত্রিবেণীর পূণ্যতীর্থে কুম্ভমেলার কথা উল্লেখ করেছেন।

বাঁশবেড়িয়ায় অবস্থিত ত্রিবেণী মুক্তবেণী নামেও পরিচিত। ষোড়শ শতাব্দীর বৈষ্ণব সন্ন্যাসী শ্রীচৈতন্যদেব এসেছিলেন ত্রিবেণীতে। কুন্তী নদী, গঙ্গা ও সরস্বতী এই তিন নদীর সঙ্গম ত্রিবেণী।

৭০২ বছর পর হুগলির ত্রিবেণীতে শুরু হলো কুম্ভমেলা। ১৩ তারিখ ছিল শাহী স্নান। মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল থেকে জানা যায় অতীতে ত্রিবেণী ছিল এক তীর্থস্থান। বহু মন্দির এখানে গড়ে ওঠে। ত্রিবেণী ঘাটের কিনারে আজ কিছু মন্দির টিকে আছে। এখানে এক সময় বহু টোল ছিল। জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন, রঘুদেব বাচস্পতি, রুদ্রদেব ছিলেন বিখ্যাত সব পণ্ডিত। উড়িষ্যার রাজা মুকুন্দদেব এখানে বহু মন্দির ও ঘাট নির্মাণ করে দেন। চতুর্দশ শতাব্দীর গোড়াতে এই ধর্মতীর্থে মুসলমান অভিযান হয়েছিল।

ত্রিবেণী সপ্তর্ষি ঘাটে বহু সাধু ও পুণ্যার্থীদের ভিড় হয় ক্ষুদ্র কুম্ভে। নির্ঘণ্ট মেনে দুপুরে শাহি স্নান শুরু হয়। দুপুর থেকে শুরু হয়েছিল প্রচুর লোকের সমাগম। হাজার হাজার মানুষের ভিড় চোখে পড়েছিল। তবে নির্বিঘ্নে স্নান হয়। স্নানের পর ঘাটে পুজো ও যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছিল। সাধুদের আশীর্বাদ ভক্তরা নেন। বিভিন্ন নাগা সাধুদের আগমন কুম্ভমেলায় ঘটেছিল। পুণ্যার্থীরা খুবই খুশি ছিলেন সকল রকম পরিষেবা পেয়ে। মেলা চত্বর কার্যত কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধু ও ভক্তরা আসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *