ঘুরে আসুন রাজ্যের বারোটি শৈব তীর্থ, পর্ব ৩

পর্ব ৩

শিবের জটায় থাকে গঙ্গা। আর এই পবিত্র নদী গঙ্গা পাড়ে একের পর এক শৈব তীর্থ। তাছাড়াও বিভিন্ন নদীর পাড়ে বাংলার একাধিক শৈব তীর্থ সুবিখ্যাত। শুধু ধর্মীয় দিক থেকে নয়, এই সকল অঞ্চলের ইতিহাস যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। লোকসংস্কৃতির নানা উপাদানে পরিপূর্ণ।

শিব পার্বতী পঞ্জিকায়

শিবনিবাস:
চলুন এবার যাওয়া যাক বাংলার কাশী। ঘুরে আসুন পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শিবনিবাস গ্রাম থেকে। ১৭৪৫–১৭৪৯ এর মধ্যে বাংলায় বর্গি আক্রমণ হয়। একের পর এক গ্রাম মারাঠা বর্গী আক্রমণে শ্মশান হয়ে যায়। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র কৃষ্ণনগর থেকে রাজধানী সরিয়ে আনেন শিবনিবাস গ্রামে। তিনিই এই জায়গার নামকরণ করেন। শিবনিবাসে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র জাঁকজমক ভাবে বিপুল আয়োজন করে অগ্নিহোত্র বাজপেয় যজ্ঞ করেন। কাশী, কাঞ্চি থেকে পন্ডিত নিয়ে এসে বহু শাস্ত্র পাঠ ও যজ্ঞ করেন। ওই সময়ে শিবনিবাস কাশী হিসেব পরিচিত হয়। শিবনিবাসে রাজরাজেশ্বর মন্দির খুব উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য। স্থানীয়দের কাছে এটি বুড়ো শিবের মন্দির। পাশেই আছে রাজ্ঞীশ্বর শিব মন্দির ও ট্রাপিজিয়াম চতুর্ভুজের আকারে রামসীতা মন্দির। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চুর্নি নদী।

শিবের মুখোশ

নবদ্বীপের বাবা বুড়োশিব:
শিবরাত্রির দিন মনে করা হয়, ভগবান শিব পার্বতীকে বিয়ে করেন। নবদ্বীপে শিবের এক অদ্ভুত মুখোশ পাওয়া যায়। যেটি পড়ে শিব পার্বতীকে বিয়ে করতে যায়। মাথায় টোপর। তারওপর বাসানো থাকে সাপ। আসলে নবদ্বীপে বুড়োশিব এই বেশে বিয়ে করেন। কথিত যে, তাহলে যতটা বুড়ো মনে হয় ততটা মনে হবে না। নবদ্বীপের বুড়োশিবতলার বুড়োশিব খুব জাগ্রত। বহু প্রাচীন। শিবরাত্রিতে বহু দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন মানত করতে। তীর্থমঙ্গলে এই শিবের উল্লেখ আছে।

বড়নগরের মন্দির

বড়নগর:
মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে বড়নগর। দেশের ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’। এখানে আছে নাটোরের রানি ভবানীর চারবাংলা মন্দির। টেরাকোটা শিল্পের অনন্য এক ভান্ডার। গঙ্গা নদীর পাড়ে অন্যতম এক পর্যটন ক্ষেত্র। বড়নগরকে একসময় বাংলার বারানসী বলা হত। মহাশিবরাত্রি ও শিবের অন্যান্য উৎসবে প্রতিবছর পর্যটক ভিড় করেন।

(চলবে)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top