পর্ব ৩
মুকুট তপাদার
দেউলীর মকর সংক্রান্তি মেলা
পৌষ মাসে মকর সংক্রান্তিতে সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে। ২০২৫ সাল, এ বছর মহাকুম্ভ স্নান। ১৪৪ বছর পর এই যোগ আসে। ১৪ই জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি।
বীরভূমে দেউলীর মকর সংক্রান্তি মেলা উৎসবের সঙ্গে পালন করা হয়। শ্রী শ্রী মহাদেব মন্দির, কুবের নাথ মন্দির, শ্রী শ্রী ভৈরব নাথ মন্দির ও পার্বতী মন্দিরে বিশেষ নিয়ম করে পূজা-অর্চনা হয়। মন্দিরগুলো অত্যন্ত প্রাচীন। এই দিনগুলিকে কেন্দ্র করে হরিনাম সংকীর্তন মেলাতে অনুষ্ঠিত হয়।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষও দিনটি পালন করেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষের কাছে দিনগুলো খুবই পবিত্র। বীরভূমে অতীতে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের বসবাস ছিল। দেউলীতে অজয় নদী পেরিয়ে পান্ডুক এলাকায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বাস ছিল। সেই আমলের নানা প্রত্নসামগ্রী নদীর আশেপাশে পাওয়া গেছে।

দেউলীতে অজয় নদে দিব্য স্নান সেরে সূর্য পূজা হয়। কেন্দুলী গ্রামের মেলার আকর্ষণ অনেকের কাছে খুবই চেনা। কিন্তু দেউলীর ঐতিহ্যময় মকর সংক্রান্তি মেলাও আনন্দের সঙ্গে উদযাপিত হয়।
গ্রামের বয়স্ক মানুষদের মুখে মুখে এই মেলার কথা শোনা যায়। মেলার আকর্ষণ বাউল গান। বীরভূমের বাউল শিল্পীরা মেলায় গান গাইতে আসেন। হয়তো কোন এক বাউলের কণ্ঠে শোনা যায় গগন হরকরার সেই গান,
“আমি কোথায় পাব তারে,
আমার মনের মানুষ যে রে।”
নানা ধরনের মিষ্টি ও নতুন গুড়ের পিঠে মেলাতে বিক্রি হয়। রকমারি পসরা নিয়ে হাজির হন বিক্রেতারা। অনেক লোকসমাগম ঘটে। দেউলীর মকর সংক্রান্তির মেলা ঘিরে থাকে গ্রামে স্থানীয় ও খুদেদের ভিড়।
মেলায় কিভাবে যাবেন : শিয়ালদহ বা হাওড়া থেকে ট্রেনে বোলপুর। সেখান থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে দেউলী গ্রাম। বোলপুর থেকে টোটো বা গাড়ি বুক করে ঘুরে নিন।
(চলবে)