• https://dewanarsitek.id/var/index/
  • https://ept.metropolitanland.com/
  • https://data.pramukajabar.or.id/
  • http://103.206.170.246:8080/visi/
  • https://mpp.jambikota.go.id/
  • https://lms.rentas.co.id/
  • https://utbis.ollinsoft.com/
  • https://bppsdmsempaja.kaltimprov.go.id/
  • https://fmipa.unand.ac.id/
  • https://sptjm.lldikti4.id/banner/
  • mbokslot
  • https://e-journal.faperta.universitasmuarabungo.ac.id/
  • https://link.space/@splus777
  • https://sptjm.lldikti4.id/storage/
  • https://apps.ban-pdm.id/simulasi/hoaks/
  • https://editoriales.facultades.unc.edu.ar/cache/assets/
  • https://dewanarsitek.id/dewan/
  • https://dms.smhg.co.id/assets/js/hitam-link/
  • https://smartgov.bulelengkab.go.id/image/
  • https://app.mywork.com.au/
  • slotplus777
  • https://heylink.me/slotplussweet777/
  • https://pastiwin777.uk/
  • Mbokslot
  • http://103.81.246.107:35200/templates/itax/-/mbok/
  • https://rsjdahm.id/vendor/
  • https://pastiwin777.cfd/
  • https://rsjdahm.id/Vault/
  • https://heylink.me/Mbokslot.com/
  • https://www.intersmartsolution.com
  • https://sikapro-fhisip.ut.ac.id/
  • পরমেশ্বরের সন্ধানে কৈলাস-মানসে: পর্ব ১/ ডাক এল - Bhramon Online
    ভ্রমণ কাহিনি

    পরমেশ্বরের সন্ধানে কৈলাস-মানসে: পর্ব ১/ ডাক এল

    সুব্রত গোস্বামী

    ২০১৯এর এপ্রিল। বিদেশ দফতর থেকে এল মেল। আমার সমস্ত শরীর রোমাঞ্চিত। তা হলে কি আমার স্বপ্ন বাস্তব হতে চলেছে? গত প্রায় দশ বছর ধরে যে স্বপ্ন মনে মনে লালন করে এসেছি, সে স্বপ্ন কি সত্যি হবে? বিদেশ দফতর জানিয়েছে, কৈলাসমানসযাত্রায় আমার নাম লটারিতে উঠেছে। ১৩ নম্বর ব্যাচে আমার নাম রয়েছে। অবশ্য নাম ওঠাই সব নয়। এর পরেও আরও এক ধাপ পেরোতে হবেশারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। যা হোক, প্রথম ধাপ অর্থাৎ লটারির ধাপটা তো উতরেছি, যেটা আমার হাতে ছিল না। এর পরের ধাপ, নিজের চেষ্টায় উতরে যাব, সে মনের জোর আমার আছে।

    ২০১০ সালে সুযোগ হয়েছিল অমরনাথধাম দর্শন করার। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখছি কৈলাসমানস সরোবর দর্শনের। পরমারাধ্য দেবাদিদেব মহেশ্বর যিনি অমৃত বিলান, অথচ নিজে গরল পান করে হয়েছেন নীলকণ্ঠ, যিনি চোখের পলকে ইন্দ্রচন্দ্রসূর্যবরুণকে চূর্ণবিচূর্ণ করে ত্রিজগৎ লণ্ডভণ্ড করে প্রলয় ঘটাতে পারেন, যাঁর কণ্ঠে স্বয়ং উমা দিয়েছেন বরমাল্য, তিনি বাস করেন কৈলাসে। সেই কৈলাস না গেলে তাঁর মহিমা বোঝা যায় না। সেই কৈলাসদর্শনের সুযোগ এল, সঙ্গে মানস সরোবর। এই সুযোগকে কাজে লাগাতেই হবে

    অন্য রূপে কৈলাস। ছবি: লেখক।

    সংস্কৃতেকৈলাসথেকে পর্বতের নাম কৈলাস অনেকে বলেন, ‘কেলাস’ (ইংরেজিতে ক্রিস্টল অর্থাৎ স্ফটিক) শব্দটি থেকেকৈলাসকথাটির উৎপত্তি তিব্বতি ভাষায় এর নামগাংস রিনপোচে তিব্বতিতেগাংসবাকাংশব্দের অর্থ তুষারশৃঙ্গ; আররিনপোচেশব্দটি ব্যবহার করা হয় অমূল্য কিছুকে (সে ব্যক্তি বা বস্তু, যা হোক) সম্মান জানাতে যে কারণে তিব্বতি ধর্মগুরু পদ্মসম্ভবকে বলা হয়গুরু রিনপোচেঅর্থাৎঅমূল্য প্রভু যা হোক, ‘গাংসআররিনপোচেদুয়ে মিলেকৈলাসহলতুষারের অমূল্য মণি

    কিংবদন্তি অনুসারে শুধুমাত্র বৌদ্ধ ধর্মগুরু মহাযোগী মিলারেপাই পা রাখতে পেরেছিলেন কৈলাসশীর্ষে। ফিরে এসে তিনি নিষেধ করেছিলেন এই পর্বত জয় করতে। আধুনিক পর্বতারোহীদের মতে, কৈলাস পর্বতের শীর্ষে ওঠা দুরূহ। পশ্চিম তিব্বতের ৬৬৩৮ মিটার তথা ২১৭৭৮ ফুট উঁচু এই পর্বত হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন এবং তিব্বতের প্রাচীনবনধর্ম, সকলের কাছেই এক পবিত্র তীর্থক্ষেত্র হিন্দু পুরাণে কৈলাস পর্বতকেশিবের লীলাধামবলা হয়। শিব তাঁর সহধর্মিণী দুর্গা এবং তাঁদের অনুচরেরা কৈলাস পর্বতে বাস করেন। জৈন ধর্ম অনুসারে, তাদের প্রথম তীর্থংকর আদিনাথ ঋষভদেব কৈলাসে নির্বাণলাভ করেন। ইউরোপের অকাল্টবাদীরা কৈলাস পর্বতকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। তাঁদের মতে, এখানে অতিপ্রাকৃত শক্তির অবস্থান। অনেকের মতে, এই স্থান যাবতীয় অতিপ্রাকৃত ক্রিয়াকলাপের কেন্দ্র। মোদ্দা কথা, বিশ্ববাসীর কাছে কৈলাসের একটা আলাদা মাহাত্ম্য আছে।

    কৈলাসের অদূরেই মানস সরোবর, তিব্বতের রাজধানী লাসা থেকে ১২১৩ কিমি। পুরাকালে ব্রহ্মা কৈলাস পর্বতে মনের দ্বারা এক সরোবর নির্মাণ করেন। ব্রহ্মার মানসউদ্ভূত, তাই নামমানস সরোবর মানস সরোবর পাহাড়ে ঘেরা হ্রদ বটে, তবে এক সমুদ্র বিশেষ। ৪০০ বর্গকিমিরও বেশি এলাকা জুড়ে এর বিস্তৃতি। দেখতে অনেকটা ডিম্বাকার। পূর্ব দিকে সাড়ে ২৫ কিমি, দক্ষিণে ১৬ কিমি, পশ্চিমে প্রায় ২১ কিমি এবং উত্তরে ২৪ কিমি। কোণাকুণি দৈর্ঘ্য সাড়ে ২২ কিমি থেকে ২৫ কিমি। সাগরবক্ষ থেকে ১৫০৬০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই হ্রদের সর্বাধিক গভীরতা ৩০০ ফুট পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে। পশ্চিম দিকে রাক্ষসতাল তথা রাবণ হ্রদ উত্তর দিকে কৈলাস পর্বত। ১৫০১০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত রাক্ষসতালও কিছু কম যায় না। এর বিস্তৃতি ২৫০ বর্গকিমি এলাকা জুড়ে  

    রাক্ষসতাল।

    বাংলা ভাষায় একটা কথা আছে – ‘মান্ধাতার আমল সেই রাজা মান্ধাতাই নাকি প্রথম মানস সরোবরের সন্ধান পান এই হ্রদের তটেই তিনি ধ্যাননিমগ্ন থাকেন তাই তাঁর নামে সরোবরের দক্ষিণ তীরের শৈলশ্রেণির নামকরণ করা হয় মান্ধাতা শৈলশ্রেণি, গুরলা মান্ধাতা পুরাণ মতে, মানস সরোবর ৫১ সতীপীঠের অন্যতম দেবীর হস্তখণ্ড পতিত হয়েছিল এই স্থানে মহাকবি কালিদাসেরমেঘদূতএবংকুমারসম্ভব’- কৈলাস মানস সরোবরের উল্লেখ আছে সপ্তম শতাব্দীর বিখ্যাত নাট্যকার কবি বানভট্ট তাঁরহর্ষচরিতগ্রন্থে মানস সরোবরকেপদ্মদিঘিহিসাবে বর্ণনা করেন

    কৈলাস পর্বত তার সংলগ্ন অপার্থিব সৌন্দর্যময় মানস সরোবরকে নিয়ে রহস্য কম নেই। মানস সরোবরে ভোর রাতে আলোর খেলার রহস্য আজও অজানা। এখানে রাত কাটাতে এসে অনেকেই দেখেছেন কৈলাস পর্বতে দুটি উজ্জ্বল আলো দপদপ করছে। একটু লক্ষ করলেই দেখা যায়, একটি আলো অন্যটিকে অনুসরণ করছে। এই আলোর প্রভাবে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে মানস সরোবর। সেই অপার সৌন্দর্য থেকে চোখ ফেরানো কঠিন হয়ে ওঠে। এই আলোর প্রকৃত সত্য আজও অনাবিষ্কৃত। লোকবিশ্বাস, ভোররাতে শিবপার্বতী মানস সরোবরে অবগাহন করতে আসেন। এই আলোর শিখাই আসলে দেবাদিদেব মহেশ্বর পার্বতী

    বিদেশ দফতরের মেল পেয়ে চিন্তার অতলে ডুব দিয়েছিলাম। নজর গেল চিঠির বাকি পাঠ্যাংশের দিকে। জানানো হয়েছে, জুলাই মাসের ২৬ তারিখে আমাকে দিল্লি পৌঁছোতে হবে। ২৬ দিনের কৈলাসমানসযাত্রার আগে দিল্লিতে আমাকে শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা দিতে হবে। সেই পরীক্ষায় পাস করলে যাত্রার অনুমতি মিলবে

    শুরু করে দিলাম শরীরচর্চারোজ সকালে উঠে ১০ কিমি হাঁটা, কিমি দৌড় ৫০০ সিঁড়ি ভাঙা। এই ছিল আমার রোজের রুটিন। দেখতে দেখতে শরীরের ওজন অনেক কমিয়ে ফেললাম। বিএমআই তথা বডি মাস ইনডেক্স ২৫এর কম হতে হবে। না হলেই দিল্লি থেকেই ফেরতযাত্রা

    টিকিট কাটা হল, ২৫ জুলাই শিয়ালদহ স্টেশন থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস সঙ্গে থাকবেন আমার জহরভাই, আমার অমরনাথ যাত্রার সঙ্গী কৈলাসমানসযাত্রার লটারিতে জহরভাইয়েরও নাম উঠেছে স্মৃতি হাতড়ে চলেছি কত সুখ, কত দুঃখ ভাবছি সত্যিই কি আমি যেতে পারব? আমার চোখ জলে ভরে উঠছে মনকে বললাম, আমি তো যাচ্ছি পরমেশ্বরের সন্ধানে তা হলে কেন এই সুখদুঃখের অনুভূতি?

    যাওয়ার আগে আমার সহধর্মিণীর কাছ থেকে ইনডেমনিটি বন্ডে সই করিয়ে নিলামতীর্থদর্শনে গিয়ে তিব্বতে তথা বর্তমান চিনে আমার যদি মৃত্যুও হয়, তবে আমার শেষকৃত্য তিব্বতেই সম্পন্ন হবে। এই নশ্বর শরীর ভারতভূমিতে যাবে না। অশ্রুসিক্ত নয়নে আমার স্ত্রী বন্ডে সই করে দিলেন। আমার মতো আদ্যন্ত প্রকৃতিপ্রেমী মানুষকে নিয়ে তাঁর চিন্তার অন্ত নেই। যদি কিছু হয়ে যায়! আমার কোনো কাজেই আমার স্ত্রীপুত্র বাধা দেয় না। এঁদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। বাড়িতে বৃদ্ধা মা শাশুড়িমাকে ফেলে রেখেই চললাম পরমেশ্বরের সন্ধানে

    প্রভু না ডাকলে যাত্রায় যাওয়া যায় না। যাওয়ার পাঁচ দিন আগে আমার স্ত্রীর শরীর এত খারাপ হয়েছিল যে ভেবেছিলাম যাত্রা বাতিল করে দেব। দিকে জহরভাইয়ের বাবা অযোধ্যায় গিয়ে দেহ রেখেছেন। এই অবস্থায় কি জহরভাই যেতে পারবে? অথচ প্রকৃতি আমাকে টানছেমহেশ্বর যেন তাঁর দুই হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। শুধু তাঁর দর্শনের অপেক্ষা

    শিয়ালদহ স্টেশনে জহরভাইয়ের সঙ্গে।

    অবশেষে শিয়ালদহ স্টেশন। পৌঁছে অবাকজহরভাই এসেছে সঙ্গে তার মামামামি এবং দুই বোন। ফুলের মালা মিষ্টি মুখে তুলে আমাদের বিদায় জানালেন। নিজেদের তখন খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছিল

    যাত্রা শুরু হল। ঠিক সময়েই ট্রেন ছাড়ল। কলকাতা ছেড়ে দিল্লির উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছি। একটু পরেই চলে এল সন্ধের জলখাবার। ঋষভের কথা খুব মনে পড়ছে। ঋষভ আমার ছেলে, গত বছর ঠিক এই সময়েই ওকে নিয়ে গিয়েছিলাম লেলাদাখ। এই রাজধানীতেই যাত্রী ছিলাম আমরা। ট্রেনের খাবার ঋষভের খুব ভালো লেগেছিল। আজ আর সেই সব পছন্দের খাবার আমার ভালো লাগছে না। এটা কি ঋষভ পাশে নেই বলে, নাকি খাবারের মানই খারাপ হয়েছে? জানি না, তবে ঋষভের অভাব প্রতি মুহূর্তে অনুভব করছিলাম। (চলবে)

    ছবি: লেখক                          

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *