শীতে স্বল্প দিনের ভ্রমণ: রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঐতিহাসিক গঙ্গাবাস

গঙ্গাবাসে প্রাচীন তেঁতুল গাছ
গঙ্গাবাসে প্রাচীন তেঁতুল গাছ

এবার শীতে একদিনের ঘোরার জন্য সেরা ঠিকানা হতে পারে গঙ্গাবাস। সেখানে লুকিয়ে আছে এক অদ্ভুত শান্তি। নবদ্বীপাধিপতি কৃষ্ণচন্দ্রের হরিহর মন্দিরটি গঙ্গাবাসে অবস্থিত।

কৃষ্ণনগরে আমঘাটার গঙ্গাবাসে মন্দিরটির চারপাশের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে আসেন পর্যটকরা। গঙ্গাবাস নামকরণ করেছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র স্বয়ং।

জায়গাটি নবদ্বীপের নয়টি দ্বীপের মধ্যে একটি। দ্বীপের নাম গোদ্রুম দ্বীপ। এর অন্তর্গত সুবর্ণবিহার। একটি প্রত্নক্ষেত্র।

একটা সময় শান্তিপুর হয়ে এই আমঘাটার উপর দিয়ে মার্টিন কোম্পানির ন্যারোগেজ রেল নবদ্বীপ ঘাট অবদি যেত। এই আমঘাটাতেই গঙ্গাবাস।

হরিহর মন্দির

অলকানন্দা নদীর তীরে গঙ্গাবাসে কৃষ্ণচন্দ্র শেষ জীবন কাটান। গঙ্গাবাস সবুজে ঘেরা মনোরম। আশেপাশে বিশাল কান্ড নিয়ে কটি বহু বছরের পুরনো তেঁতুল গাছ রয়েছে। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে অলকানন্দা নদী। বর্তমানে অলকানন্দা ক্ষীণতোয়া। হরিহর মন্দিরে হরিহরের বিগ্রহটি কৃষ্ণচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত করেন। বিগ্রহ চতুর্ভুজ। সঙ্গে আছে মাটির পার্বতী ও লক্ষী। মন্দিরে অন্যান্য মূর্তিও আছে।

অতীতকালে শোনা যায়, যে বৌদ্ধধর্ম বনাম হিন্দু ধর্মে হরিহর দেবতা নির্মান হয়। বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব বৃদ্ধি পেলে শৈব ও বৈষ্ণবরা একত্রিত হয়ে হরিহর মূর্তি স্থাপন করেছিলেন। ১৭৭৬ সালে মন্দিরটি তৈরি হয়। শিখরদেশটি ত্রিকোণ চারচালা।

হরিহর ও অন্যান্য বিগ্রহ

মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র নিভৃতে তার শেষ জীবন এখানেই কাটিয়েছিলেন। সম্ভবত পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র মন্দির যেখানে শ্রীরামচন্দ্রের প্রস্তর পদচিহ্ন আছে। বিপুল অর্থ খরচ করে কৃষ্ণচন্দ্র এই পদচিহ্ন ত্রিকুট পাহাড় থেকে নিয়ে আসেন।

কিভাবে যাবেন

ট্রেন পথে কৃষ্ণনগর স্টেশন থেকে টোটো বা বাসে আমঘাটা স্টপেজে নামুন। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে বা টোটো করে চলে আসুন মন্দির প্রাঙ্গণ। শান্ত, নিরিবিলি জায়গাটি আপনার মন ভরিয়ে তুলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *