ভ্রমণের খবর

মাইথন-পাঞ্চেতে অ্যাডভেঞ্চার ওয়াটার স্পোর্টস! পর্যটনকে ঘিরে ডিভিসির ‘মাস্টার প্ল্যান’, তিলাইয়ার জলেও ভাসমান রির্সট গড়ার ভাবনা

মাইথন, পাঞ্চেত ও তিলাইয়ার বিশাল জলাধারগুলিকে কেন্দ্র করে এবার পর্যটনের নতুন দিগন্ত খুলতে চলেছে ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন)। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ। লক্ষ্য— এই প্রাকৃতিক জলাধারগুলিকে অ্যাডভেঞ্চার ওয়াটার স্পোর্টসের কেন্দ্র করে তোলা এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা।

ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, সার্ফিং, জেট স্কিইং, ওয়াটার স্কিইংয়ের মতো চিত্তাকর্ষক জলক্রীড়া কার্যক্রমের আয়োজন করার ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি গড়ে তোলা হবে রিসর্ট, এমনকি জলাধারের মধ্যেই ভাসমান রির্সট— যা পর্যটনে বাড়াবে নতুন মাত্রা।

পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে ডিভিসি সম্প্রতি শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন বণিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শচীন রায়, আসানসোল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গিয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি লিজের সুযোগ পেলে অনেক বেসরকারি সংস্থা এই প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী।

শচীন রায় বলেন, “খুবই সাধু উদ্যোগ। বর্তমানে বহু পর্যটন কেন্দ্র ওয়াটার স্পোর্টসের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়েছে। মাইথনেও তেমন সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে দীর্ঘমেয়াদি লিজ না দিলে বড় বিনিয়োগ আসবে না।”

ডিভিসি-র এক আধিকারিক জানান, চার মাসের মধ্যে পর্যটন সংক্রান্ত মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে। স্থানীয় মানুষ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে লাগাতার আলোচনা চলছে, যাতে সব স্তরের মানুষের প্রয়োজন ও চাহিদা মাথায় রেখে পরিকল্পনা সাজানো যায়।

তবে প্রকল্প নিয়ে কিছু প্রশ্নও উঠে এসেছে। কারণ মাইথন বা পাঞ্চেত বাঁধ তৈরি হয়েছিল মূলত বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও গ্রীষ্মে কৃষিকাজের জন্য জল সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে। এখন ওয়াটার স্পোর্টসের কারণে জল ধরে রাখার সময়সীমা বাড়লে গ্রীষ্মকালে সেচের জন্য জল ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। রাজ্য সরকার এর আগেও অভিযোগ করেছে, প্রয়োজনীয় জল সরবরাহে ডিভিসি ব্যর্থ হচ্ছে।

এখন দেখার, পর্যটনের বিকাশ ও কৃষির চাহিদার মধ্যে কীভাবে ভারসাম্য রাখে ডিভিসি। তবে ভ্রমণপিপাসুদের কাছে মাইথন, পাঞ্চেত বা তিলাইয়ার জলাধার যে নতুন করে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *