দার্জিলিংয়ে যেতে পারছেন না? সমস্যা নেই! বর্ষার রূপে মন ভরাবে দেওমালি, কৈমুর ও তুলিন—তিন বিকল্প পাহাড়ি গন্তব্য
উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়ে অনেকেই বাতিল করছেন দার্জিলিং সফরের পরিকল্পনা। যদিও আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সপ্তাহের শেষে বর্ষা বিদায় নেবে, তবুও পাহাড়ে যেতে অনেকেই দ্বিধায়। কিন্তু ভ্রমণ তো থেমে থাকে না! প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য রইল তিনটি বিকল্প পাহাড়ি গন্তব্য—দেওমালি (ওড়িশা), কৈমুর (বিহার) এবং তুলিন (পুরুলিয়া, পশ্চিমবঙ্গ)। দার্জিলিংয়ের বিকল্প না হলেও এই জায়গাগুলির সৌন্দর্য মন ভরিয়ে দেবে।
১. দেওমালি — ওড়িশার মেঘছোঁয়া পাহাড়
ওড়িশার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ দেওমালি এখন সবুজে মোড়া। পূর্বঘাট পর্বতমালার কোরাপুট জেলার এই পাহাড়ে বর্ষার জল মিশেছে প্রকৃতির রঙে।
ঝরনা, উপত্যকা, নদী, মন্দির—সবই একত্রে দেখা যায় এখানে।
দেখার জায়গা
- ডুডুমা জলপ্রপাত (মাচকুণ্ড নদীতে)
- গুপ্তেশ্বর মন্দির (অরণ্যের গুহায় শিবলিঙ্গ)
- কোলাব ড্যাম ও শবর শ্রীক্ষেত্র
- কফি বাগিচা এবং নেচার ক্যাম্প
কী ভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে সম্বলেশ্বরী এক্সপ্রেসে কোরাপুট নামুন। সেখান থেকে দেওমালি ৭০ কিমি দূরে।
ভুবনেশ্বর থেকেও রোড ট্রিপ করা যায় (৪৬৪ কিমি)।

২. কৈমুর — বিহারের অরণ্য ও জলপ্রপাতের রাজ্য
বিন্ধ্য পর্বতমালার পূর্ব প্রান্ত কৈমুর রেঞ্জ, বর্ষায় হয়ে ওঠে এক টুকরো স্বর্গ।
সবুজ পাহাড়, উচ্ছ্বল জলপ্রপাত, প্রাচীন মন্দির আর দুর্গ—সবই মিলে ইতিহাস ও প্রকৃতির চমৎকার সংমিশ্রণ।
দেখার জায়গা:
- সাসারামের শের শাহ সুরির সমাধি
- মুন্ডেশ্বরী মন্দির (গুপ্তযুগের স্থাপত্য)
- ধুঁয়াকুণ্ড, মনঝর কুণ্ড, সীতা কুণ্ড জলপ্রপাত
- তুতলাভবানী ইকো ট্যুরিজম স্পট
- করমচাট ও ইন্দ্রপুরা জলাধার
- কর্কটগড় দুর্গ ও জলপ্রপাত
কী ভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে রাতে ট্রেন ধরুন — দুন এক্সপ্রেস, পূর্বা, নেতাজি এক্সপ্রেস বা মুম্বই মেল।
সাসারাম পৌঁছে ঘুরে নিতে পারেন কৈমুর ও রোহতাস জেলার সৌন্দর্য।

৩. তুলিন — পুরুলিয়ার অদেখা রূপ
দূরে নয়, কাছেই যদি পাহাড় দেখতে চান, চলে যান পুরুলিয়ার ঝালদা মহকুমার তুলিনে।
বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তে সুবর্ণরেখার ধারে গাছপালা ঘেরা ছোট্ট গ্রামটি এখন অফবিট গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয়।
দেখার জায়গা
- মুরুগুমা জলাধার (২৩ কিমি দূরে)
- অযোধ্যা পাহাড়, পাখি পাহাড়, মার্বেল লেক
- বামনী ফলস, ছৌ মুখোশের গ্রাম চড়িদা
কী ভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে ক্রিয়াযোগ এক্সপ্রেস বা রাঁচী শতাব্দী এক্সপ্রেসে মুরী জংশন নামুন।
মুরী থেকে তুলিন মাত্র ৫ কিমি। সড়কপথেও পুরুলিয়া হয়ে পৌঁছানো যায়।
দার্জিলিং আপাতত বিপর্যস্ত হলেও দেওমালির মেঘ, কৈমুরের ঝর্না আর তুলিনের অরণ্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা দিতে পারে।
এই তিন গন্তব্যে আপনি পাবেন প্রকৃতির প্রশান্তি, পাহাড়ি রোমাঞ্চ আর অফবিট সৌন্দর্যের ছোঁয়া—যা দার্জিলিংয়ের বিকল্প না হলেও ভ্রমণপিপাসুদের মন ভরাবে নিশ্চিতভাবেই।
আরও পড়ুন: পাহাড়ের গায়ে হেলান দিয়ে সমুদ্র, চলুন ভাইজ্যাগের কাছে অসাধারণ সুন্দর এই সৈকতে