স্বল্পচেনা উত্তরবঙ্গ: ভুটান পাহাড়ের পাদদেশে চামুর্চি

ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: ডুয়ার্স উপভোগও করা যাবে আবার নির্জনতাও থাকবে, এমন জায়গা আজকাল অনেক ভ্রমণপিপাসু মানুষই খোঁজেন। শহুরে জীবন থেকে দু’ দণ্ড বিশ্রাম নেওয়ার জন্য এই বেড়াতে যাওয়া, আবার সেখানেও যদি কোলাহল থাকে, তা হলে অনেকের কাছেই সেটা উপভোগ্য হবে না। তাই তো জলদাপাড়া বা গোরুমারার বাইরে নির্জনতা খুঁজে বেড়ান অনেকেই। এই ধরনের ভ্রামণিকের কাছে আদর্শ জায়গা হতে পারে চামুর্চি।

জায়গাটির সঙ্গে জয়ন্তীর খুব একটা মিল নেই, আবার একটু একটু মিল আছে বটেও। জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট অঞ্চলে ভুটান পাহাড়ের পাদদেশে একটা বড়ো নদীর ধারে অবস্থিত ডুয়ার্সের এই নতুন টুরিস্ট স্পটটি।

ভুটান এখান থেকে হাত বাড়ালেই। চামুর্চি না গেলে আপনি বিশ্বাসও করতে পারবেন না ভুটান এতটা কাছে হতে পারে! দিনে বেশ কয়েক বার ভুটান থেকে ঘুরে আসতে পারেন আপনি। চামুর্চির ইকো রিসর্ট থেকে হাঁটতে বেরিয়ে কখন যে  ভুটানে আপনি ঢুকে গিয়েছেন বুঝতে পারবেন না। এটা পাথরখাদানের গায়ে লাগানো বোর্ড জানিয়ে দেবে আপনি ভুটানের সামচি জেলায়।

যা-ই হোক, চামুর্চির আসল কথায় ফেরা যাক। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে আদর্শ জায়গা হতে পারে এই চামুর্চি। এখানে থাকার একটি মাত্র জায়গা, চামুর্চি ইকো রিসর্ট। এই রিসর্টে রাত কাটানোটাই একটা অভিজ্ঞতা। রিসর্টের বারান্দায় দাঁড়িয়ে সামনে তাকালেই আপনার সামনে সুউচ্চ পাহাড় এবং সেই নদীটা। এই নদীর নাম নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেই মতপার্থক্য রয়েছে। কারও দাবি এটি ডায়না, কেউ কেউ বলেন এটা চামুর্চি নদী। নামে কী আসে যায়, নদীর সৌন্দর্য আপনাকে মোহিত করবেই। আর আপনার পেছনে রয়েছে একটি ছোট্ট নদী। মানে আপনাকে রিসর্টে আসতে হবে ওই ছোটো নদীটি পেরিয়ে। নাম তার ‘সুখারেতি।’ বছরের বেশির ভাগ সময়ে, এমনকি বর্ষাতেও বৃষ্টি না হলে ওই নদী শুকনো থাকে। সেই শুকনো নদীর ওপর দিয়ে অনায়াসেই পেরিয়ে যায় গাড়ি।

চামুর্চি নদী

চামুর্চিতে দু’টো দিন স্রেফ বিশ্রামেও কাটাতে পারেন আবার ট্রেকিংয়ের ইচ্ছে থাকলে বেরিয়ে যান মহাকাল মন্দির দর্শনের উদ্দেশে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় মহাকাল মন্দির রয়েছে, তেমনই রয়েছে চামুর্চিতেও।

আরও পড়ুন স্বল্পচেনা উত্তরবঙ্গ: প্রকৃতির কোলে তাবাকোশী

নদীর ধার দিয়ে কিলোমিটার তিনেক হাঁটার পর একটি পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই মহাকালের গুহামন্দির। গুহার ভেতরে স্ট্যাল্যাকটাইট এবং স্ট্যালাগমাইটের বিভিন্ন কারুকার্য দেখা যায়।

এ ছাড়াও চামুর্চি বাজারে চা-বাগানের মধ্যে খুব সুন্দর পরিবেশে অবস্থিত একটি গুম্ফা। স্যাঙ্গে তাশে ছোলিং গুম্ফায় কিছুক্ষণ কাটালে আপনার মনে শান্তি আসবেই। 

কী ভাবে যাবেন

ট্রেনে আসতে চাইলে পৌঁছোন মালবাজারের নিউ মাল জংশনে। erail.in থেকে ট্রেন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নিয়ে নিন। বিমানে আসতে চাইলে বাগডোগরাই ভরসা। মালবাজার থেকে চামুর্চি ৪০ কিমি আর শিলিগুড়ি থেকে ১০০ কিমি। মালবাজার থেকে চামুর্চির বাস পাওয়া যায়। তবে আরামে যেতে চাইলে গাড়ি ভাড়া করাই শ্রেয়।

কোথায় থাকবেন

চামুর্চি ইকো রিসর্ট।

চামুর্চিতে থাকার একমাত্র জায়গা চামুর্চি ইকো রিসর্ট। অনলাইনে বুক করার জন্য লগইন করুন chamurchiecoresort.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *