জিটিএ-র নেতৃত্বে বৈঠক, হোটেল খুলছে দার্জিলিঙে

ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত হোটেল খুলছে দার্জিলিং পাহাড়ে। হোটেল খোলা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল তা কেটে গেল সোমবার জিটিএ নেতৃত্বাধীন বৈঠকে।   সোমবার দুপুরে লালকুঠিতে ওই বৈঠক বসে। বৈঠকে যোগ দেন জিটিএ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং হোটেল-মালিক ও কর্মীদের প্রতিনিধিরা। ওই বৈঠকেই হোটেল খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়। বৈঠকের পরে দার্জিলিং হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিনোদ খন্না বলেন, ‘‘বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে হোটেল, লজ খোলার ব্যবস্থা করছি।’’

এর আগে অ্যাসোসিয়েশন সিদ্ধান্ত করেছিল, ১ জুলাই থেকে তারা দার্জিলিং পাহাড়ে সব হোটেল বন্ধ রাখবে। আশা করা যায়, সোমবারের সিদ্ধান্তের পরে অ্যাসোসিয়েশন তাদের এই সিদ্ধান্ত আর কার্যকর করবে না।

এক দিকে করোনা সংক্রমণ যেমন বাড়ছে, তেমনই অন্য দিকে দেশের আর্থিক অবস্থার হালও খুব খারাপ। পর্যটন শিল্প মারাত্মক মার খেয়েছে ও খাচ্ছে। ব্যাপক লোকসান হচ্ছে হোটেল ব্যবসায়। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ৮ জুন থেকে হোটেল খোলার নির্দেশ দিলেও, এই অবস্থায় হোটেল খোলা হবে কিনা সে নিয়ে সংশয় ছিল। এরই মধ্যে জানা গেল, হোটেল অনির্দিষ্ট কাল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত করে হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

তাদের বক্তব্য ছিল, কোভিড ১৯ (Covid 19) অতিমারির কারণে পাহাড়ে পর্যটক আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দার্জিলিঙে পর্যটকরা সব চেয়ে বেশি আসেন গ্রীষ্মকালেই। সেই গ্রীষ্মকাল এ বার কোনো ব্যবসাই দেয়নি। তার ওপর সামনে বর্ষাকাল। তখন এমনিতেই পাহাড়ে পর্যটনে মন্দা চলে। তার ওপর কোভিড ১৯। অদূর ভবিষ্যতে পাহাড়ে পর্যটক আগমনের কোনো সম্ভাবনাই নেই। এই অবস্থায় অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, হোটেল খুলে রাখা যুক্তিযুক্ত নয়।

কিন্তু দার্জিলিং পাহাড়ের ৩৮০টি হোটেল না খুললে হাজার দশেক কর্মী ও তাদের পরিবারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাঁদের কথা ভেবেই জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা বৈঠক ডাকেন।

প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং পাহাড়ে সব হোটেল-লজ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়াও বৈঠকে আরও একটি সিদ্ধান্ত হয়। ঠিক হয়, হোটেল-মালিক, কর্মী ইউনিয়নগুলি, জিটিএ, শ্রম দফতর, পুলিশ, প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। হোটেল-মালিকদের লোকসানের কথা মাথায় রেখে কমিটি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে কর্মীদের বেতনকাঠামো ঠিক করবে বলে অনীত থাপা জানান। সব হোটেল নিয়মিত সানিটাইজ় করতে হবে। কেউ সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করলে জিটিএ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে।

ডুয়ার্সের ছবিটা পাহাড়ের সঙ্গে মিলছে না। এখানকার পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি হোটেল খোলা থেকে পিছিয়ে এসেছে। মালবাজার, চালসা, ওদলাবাড়ি, লাটাগুড়ি – প্রায় সর্বত্রই হোটেল-রিসর্ট বন্ধ। লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব দিব্যেন্দু দেব বলেন, “স্থানীয় স্তর থেকে হোটেল, রিসর্ট বন্ধের নির্দেশ আছে, তাই আমরা সব কিছু বন্ধই রেখেছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *