পর্যটক এখন ব্রাত্য, তবু ছুটে যাওয়া পাহাড়ে

jahir raihan
জাহির রায়হান

‘অবসর’-এর তত্ত্বাবধায়ক স্বপন, দক্ষিণ ধুপঝোরার স্থানীয় বাসিন্দা। পাহাড় ও ডুয়ার্সের গলিঘুঁজির হালহকিকত তার নখদর্পণে, পাশাপাশি গাড়ি চালানোর দক্ষতাও ঈর্ষণীয়। তার কথনেই চলে বাহন, বাহনের ইশারায় চলে না স্বপন। সে কাজপাগল মানুষ, বসে থাকতে পারে না একেবারে। যখন কোনো কাজ থাকে না, তখন লম্বা একটা ছুঁচোলো লোহার শিক হাতে নিয়ে গোটা ‘অবসর’ চত্বরের শুকনো পাতা, টুকরো কাগজ ইত্যাদি সে গেঁথে গেঁথে তুলে পরিষ্কার করে রাখে বাগানটিকে। এ হেন স্বপন এখন বড়োই অস্থির। করোনাতঙ্কে বন্দিদশার হেতু উত্তরবঙ্গে বহু দিন ধরে পা পড়েনি পর্যটকদের। ফলে ‘অবসর’-এর ম্যানেজার স্বপন রায় নিজেই এখন অখণ্ড অবসরে, আর সেটাই তার ছটফটানির মূল কারণ।

ঘরে বসে থেকে পরিশ্রান্ত আমি স্যাঙাৎ জুটিয়ে প্রথম সুযোগেই পালিয়ে এসেছি উত্তরবঙ্গে। আর তাই রান্নাবান্না, গাড়ির আওয়াজ, লাবলু, হরি ও ইমরানের ব্যস্ততা এবং আমাদের গল্প-আড্ডায় বরাবরের পরিচিত আবহের কিছুটা ফিরে এসেছে ‘অবসর’-এ।

এক দিন বিকেলে স্বপন নিয়ে গেল সামসিং। চালসা-মেটেলি হয়ে সামসিং-এর পথে আমি এত বার এসেছি যে মনে হয় চোখ বন্ধ রেখেও নির্ভুল ভাবে বলে দিতে পারব সামসিং-এর অলিগলি। আলিপুরদুয়ারগামী রেললাইনটা পার হয়েই হঠাৎ খাড়া হয়ে যাওয়া একটা রা্স্তার বাঁক থেকে দেখা যায় সমগ্র চাপড়ামারি ও গরুমারা অভয়ারণ্যের ঘনসবুজ চাপাটি। যার ফাঁকফোঁকর থেকে চিকচিক করে জানান দেয় মূর্তি, কুর্তি, চেল, জলঢাকা প্রভৃতি নদীর উচ্ছ্বাস। সামসিং-সুলতানেখোলা-রকিআইল্যান্ড-লালিগুরাস দেখে সিপচু হয়ে চাপড়ামারি বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে ফিরে এলাম আস্তানায়।

রাতে খাওয়ার পর স্বপন বলল, দাদা চলুন কাল লাভা যাই। লাভা আমি গেছি ইতিপূর্বে, তা ছাড়া মা-কে কথা দিয়ে এসেছি যে বর্ষায় পাহাড়ে উঠব না। কিন্তু স্বপনের ইচ্ছা ষোলো আনা। তাকে বিরত করা গেল না কোনো ভাবেই। পরে বলল, আসলে দাদা চার মাস আগে শেষ উঠেছি পাহাড়ে, আর পারছি না! সুতরাং তার বিবাগী মনকে বিবাদী না করে, আবাদি করাটাই সমীচীন বোধ হল।

সেদ্ধ ভাত খেয়ে ‘অবসর’ থেকে যখন বেরোলাম আমরা, ঘড়ির কাঁটা তখন বেলা ১১টা ছুঁইছুঁই। মালবাজার হয়ে মাল নদী ও মিনগ্লাস চা-বাগিচার মাঝ বরাবর এগিয়ে চলল বাহন। সেখানে তখন নিত্য দিনের ব্যস্ততা। চা-পাতা তোলার কাজ চলছে বাগানে বাগানে। লাভা যাচ্ছি মানে শুধু লাভাই দেখতে হবে এমন কোনো পূর্বপরিকল্পিত ধারণার সমর্থক নই আমি। সুতরাং যাত্রাপথে ছোটোখাটো দোকান, পাড়া-মহল্লা, প্রাইমারি স্কুলের ছাউনি, মায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বারান্দাটিও আমার চোখ টানল আবশ্যিক কৌতূহলে। গরুবাথান বাজার পেরিয়ে চেল নদীর লোহার সেতুটি পার করিয়ে গাড়ি থামাল স্বপন। নুরুলভাই ব্যস্ত হয়ে পড়ল সেলফিতে। বেড়াতে বেরোলে আমার ফোনটি নিশ্চিত ভাবে দেহ রাখে, এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। ফলে প্রলয়ের ফোনটি চেয়ে নিয়ে আমি পাহাড়ের খাত বেয়ে নেমে আসা স্রোতস্বিনী চেলের কয়েকখানি ছবি তুলে রাখলাম ভবিষ্যতের জন্য। চেল নদীর পাশে কোনো এক স্থানে জমি কেনার কথা হয়েছিল একবার, নানা কারণে হয়ে ওঠেনি তা। অভিকে সে কথা জানাতেই ও বলল, “এখানেই আমি একটা ছোটো বনবাটী বানাতে চাই”।

যে রাস্তাটি ধরে লাভা যাচ্ছি আমরা, তা নির্মাণ করেছে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন সংক্ষেপে বি আর ও। প্রশস্ত ও মসৃণ সড়কপথ। স্বপনের কাছে জানা গেল, রাস্তাটি নাথু লা অবধি যাবে। অর্থাৎ প্রতিবেশী চীন যত বেগরবাই করবে ততই এই অঞ্চলের রাস্তাঘাটের উন্নতি হবে। তা-ও ভালো।

গত বার লাভা গিয়েছিলাম ঝান্ডি হয়ে অর্থাৎ চেলের ও-পাশের রাস্তা ধরে। এ বারে অন্য পথ। ভিন্ন পথের সন্ধান আমায় খুশি করে বরাবর। কেন না পাহাড়-ডুয়ার্স-তরাইকে আমার মগজের একটি প্রকোষ্ঠে এমন ভাবে সাজিয়ে রাখতে চাই যাতে করে স্বপ্নেও যেন ফিরে ফিরে আসে বড়ো সাধের উত্তরবঙ্গ। স্বপন জানতে চাইল, দাদা কত বার আসা হল উত্তরবঙ্গে? ছোটো করে জানালাম, ‘গুনি নাই’। আসলে গুনিই না।

রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। করোনা মহামারির তাড়নায় পর্যটকের দল গৃহবন্দি। অনেকেই এখনও দোটানায়। তাই বেড়াতে আসে না কেউ। অন্য সময় এই পথে ভ্রমণার্থীদের নিয়ে যে গাড়িগুলি ওঠানামা করে পাহাড়ে-পাহাড়ে, তারা সব বেপাত্তা। দূষণমুক্ত পাহাড়ি সবুজ তাই আরও বেশি করে প্রকট এখন। বর্ষার বর্ষণ খরস্রোতা নদীগুলিকে পরিপুষ্ট করে তুলেছে জলের প্রাকৃতিক জোগানে। আপন আপন গতিতে ছুটে চলেছে সেই স্ফটিকস্বচ্ছ জলধারা। কিন্তু তাদের দেখার লোক এ সময় বড্ড কম। মন খারাপ হল ক্ষণিকের জন্য, পর্যটকবাহিত গাড়ির চালক ও তাদের পরিবার বর্তমান পরিস্থিতিতে কী ভাবে দিন গুজরান করছে কে জানে! রাস্তার হঠাৎ বাঁকে যে পাহাড়ি গৃহবধু চায়ের দোকান দিয়েছিল, যেখানে খানিক জিরিয়ে নিত পথচলতি কোনো কোনো পর্যটকের দল, সেগুলিও কি খোলা আছে আর?

লাভা বন্ধ। মনেস্ট্রির গেটে তালা। বিজ্ঞপ্তি জানান দেয় গত ১৫ মার্চ থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রয়েছে মনেস্ট্রির প্রবেশপথ। রাস্তাঘাট শুনশান, প্রায় নির্জন। স্বপন তার পরিচিত তরুণী দোকানিকে চায়ের অনুরোধ জানিয়েও প্রত্যাখাত হল। স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সকল বেচাকেনা স্থগিত করোনার কারণে। বিকালে যে দোকানপাট খোলে তা মূলত স্থানীয় বাসিন্দাদের সুবিধার্থেই, পর্যটক এখনও পাইন পরিবেষ্টিত সুন্দরী লাভাতে ব্রাত্য। অগত্যা অনাহূত অতিথির ন্যায় ইতস্তত একটু ঘোরাঘুরি করে নিলাম আমরা সসংকোচে। অর্ধবন্ধ একটি দোকান থেকে একটি বড়োসড়ো ছাতা কিনে আনল অভিজিৎ, এসেই বলল, “ভুলই হল দাদা, ৪৬০ টাকা দাম চেয়েছিল, দরদাম করে ৪০০ টাকা দিয়ে এলাম, দাম না করে পুরোটা দিলেই বোধহয় ভালো হত।”

যে স্থানে আমাদের গাড়ি দাঁড় করানো ছিল, তার ডান দিকের রাস্তাটি সোজা চলে গেছে কোলাখাম। স্বপন বলল, দাদা চলুন লোলেগাঁও যাই, ওখান থেকে বাগরাকোট হয়ে নেমে যাব সমতলে। আমার পথ চলাতেই আনন্দ। এ হেন প্রস্তাবে তাই নিমরাজি বা গররাজি হওয়ার কোনো বৈধ-অবৈধ কারণ নেই। সুতরাং গাড়ি দৌড়ল লোলেগাওঁয়ের পথে। লাভা হাইস্কুলের সামনের রাস্তা ধরে কিছুটা এগিয়েই লোলেগাঁও যাওয়ার পথ। রাস্তাটির অবস্থা ভালো না যদিও, কাজ চলছে এই বর্ষাতেও। তবুও মাহিন্দ্রা স্করপিওর ওপর ভর করে এগোতে থাকল পঞ্চপাণ্ডব।

সমতলের বনাঞ্চল চষেছি এত দিন। লোলেগাঁওয়ের পথে পড়ল পাহাড়ি জঙ্গল, নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান। মনোরম। দর্শনীয়। পুরোটাই পাইনের দঙ্গল। বর্ষার মেঘ শামিয়ানা চড়িয়ে রেখেছে উলম্বু গাছগুলির ফাঁকে ফাঁকে। স্যাঁতসেঁতে জলীয় বাষ্প আর ফোঁটা ফোঁটা মেঘ জলবিন্দু হয়ে ঝরে পড়ছে গাড়ির বনেটে। বৃষ্টি সৃষ্টির আঁতুড়ঘরে চলে এসেছি বুঝি আমরা। দাঁড়িয়ে রয়েছি এমন এক পৃথিবীর অন্দরে যেখানে মানুষকে লকডাউন ঘোষণা করতে হয় না, প্রকৃতি নিজেই নিজেকে অন্তরিন রেখে হাঁক দেয় বিবাগী হওয়ার। জলভরা মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে অভি আর প্রলয় এগিয়ে গেল কিছুটা পায়ে হেঁটে। নুরুলভাই বাড়িতে ভিডিও কল করে তার পরিবারের সাথে ভাগ করে নিল সেই জঙ্গল-বিলাস। নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে কয়েকখানি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে বলে পড়েছি খবরের কাগজে, অভিকে বললেও বিশ্বাস করল না সে। বুঝলাম জনহীন এই দুনিয়ায়, মাটি থেকে পাহাড়ের উচ্চতায় যেখানে এমনিতেই নানান প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান চলার পথে, সেখানে বাঘমামা আছে এই বিশ্বাসে মনের ভয় আর বাড়াতে চায় না সে।

লোলেগাঁও খুশি করতে পারল না আমায়। সাদা সাদা ঘন জলীয় মেঘরাজি আড়াল করে রেখেছে গোটা স্বর্গরাজ্য। প্রায় কিছুই ঠাহর করতে না পেরে হতাশ হলাম কিছুটা। এখানেও বন্ধ দোকানপাট। চায়ের দুনিয়ায় এসেও চায়ের দেখা নেই। স্বপন বলল চলুন চারখোলে গিয়েই খাব চা। গাড়ি গড়াল আবার। পাহাড় ও জঙ্গলের বৃষ্টিভেজা পথ ধরে। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই স্বপন এগিয়ে নিয়ে চলল গাড়িখানি। তার রাস্তা মনে রাখার ক্ষমতায় অজান্তেই সন্দিহান হয়ে উঠল মন, ঠিক রাস্তায় যাচ্ছে তো স্বপন? না কি আন্দাজেই মারে ঢিল!

ভাঙাচোরা প্রায় না-থাকা রাস্তা ধরে যখন আবার মাখন-মসৃণ সড়কে উঠল গাড়ি, স্বপন দেখাল, ওই দেখুন চারখোল গ্রাম। চোখ মেলতেই প্রথম দর্শনেই প্রেমের জন্ম। সবুজের দুনিয়ায় খাপছাড়া মুনশিয়ানায় ধাপে ধাপে দাঁড়িয়ে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ি কুটিরগুলি। ঘরবাড়ি দেখেই তো পাহাড়বাসীর সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাপনের চালচিত্র ধরা পড়ে কৌতূহলীদের চর্মচক্ষে। তাদের সৌন্দর্য চেতনা এবং গাছগাছালি ও ফুলের প্রতি ভালোবাসা দূষণের সাথে ঘর করা সমতলবাসীদের হৃদয়ে জাগায় স্নিগ্ধ যাপনের অজাগতিক রূপচিত্র। আমরাও তার অন্যথা নই।

পরিচিত দোকানের অলিন্দে গাড়ি দাঁড়াতেই হাসি হাসি মুখে এগিয়ে আসে জগদীপ থাপা। স্বপন তার বন্ধুসম। চা জোগানে ব্যস্ত হয়ে পড়ে দোকানের মালকিন। সামান্য এগিয়ে দেখি একটি লম্বা রামধনু পাহাড়ের গা বেয়ে পরিস্ফুট হওয়ার অপেক্ষায়। সজীব সবুজের ক্যানভাসে সাতরঙার অপার্থিব রূপটান। আলোকচিত্রে বন্দি করার ফন্দি করতেই আরও রঙ ধরল তার সারা শরীরে। ছেলেমানুষি পেয়ে বসল অভি ও প্রলয়ের। একজন ছুটে গেল নজরমিনারের পানে, একাকী দাঁড়িয়ে আছে যে মিনার বৃহদাকার ছাউনি মাথায়। আর একজন মগ্ন হল কুটিরগুলির নির্মাণশৈলীতে। এক লেপচা শিশুকন্যা আপন খেয়ালে খেলছিল এক্কাদোক্কা, তাকে দেখেই মনে পড়ে গেল আত্মজার কথা। পথ আটকে সেই শিশুটির সাথে একটি ছবি তোলার চেষ্টা করতেই কোথা হতে নুরুলভাই এসে ঢুকে পড়ল ফ্রেমে।

আর ঠিক তার পর পরই বাতাসে ভেসে এল বৃষ্টির আগমনী। এক ছুটে উঠে পড়লাম দোকানের চাতালে। ঝুপ করে অন্ধকার নেমে গোটা পাহাড়রাজি, গোটা চারখোল জনপদে শুরু হল বৃষ্টিরানির ধারাবাহিক কলরব। উত্তরোত্তর বাড়তে থাকল তার প্রতাপ। ঝমঝম করে ঝরতেই থাকল সে পুরো পাহাড় জুড়ে। সবুজ বৃক্ষরাজি মাথা দুলিয়ে অবগাহন করতে থাকল পতিত মেঘবিন্দুর স্পর্শসুখ। আমরা তখনও সমতল থেকে প্রায় ৫৫০০ ফুট উপরে। হাঁ করে দাঁড়িয়ে অপলক দেখছি গহীন সবুজ উপত্যকায় নৃত্যরতা আকাশঝরনার  রমণীয় কৃৎকৌশল। পরিষ্কার দৃশ্যমানতায় কাঞ্চনজঙ্ঘার পাশাপাশি মাউন্ট এভারেস্টেরও দেখা মেলে চারখোল থেকে বলে জানাল জগদীপ। হিমালয়ের এই অংশটি রকমারি প্রজাতির পাখিদেরও চারণভূমি। কিন্তু তখন, সেই মুহূর্তে, বাকি সব ছাপিয়ে মনোমাঝে ভর করল অঝোর ধারায় ঝরে পড়া বিরামহীন এই মেঘজাতিকার সাথে হাত ধরাধরি করে পাথর হতে প্রান্তরে অবতরণের সমূলক আশঙ্কা।

বাগরাকোটে যখন নামলাম তখন রাত প্রায় ১০টা। স্বস্ত্বি ফিরল চোখে মুখে, ধড়ে ফিরল প্রাণ। নুরুল হাসানের ভারী গাড়ি আর স্বপনের হাতযশের সুবাদেই জান বেঁচে গেল এ যাত্রায়, নচেৎ নিশ্চিত ছিল সলিল সমাধি। অবতরণের পর সকলেই স্বীকার করল আতঙ্কিত হওয়ার কথা। এমনকি স্বপনও। পাহাড়ি বৃষ্টির তীব্র তোড় যে ভাবে আছড়ে আছড়ে পড়ছিল গাড়ির সম্মুখে তাতে ভয়ানক কিছু ঘটে যেতেই পারত যে কোনো সময়। ধস নামতে পারত হঠাৎই। খানাখন্দময় রাস্তা জুড়ে পাথরে পাথরে ছয়লাপ, গর্তগুলিতে জমে থাকা জল আসন্ন বিপদের পটভূমি, কুয়াশাসদৃশ মেঘ ও আলোহীনতার দাপটে এক হাত দূরের রাস্তাও ঝাপসা। বার দুয়েক তো অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে পড়তেও হয়েছিল যত্রতত্র, দাঁড়িয়ে পড়েছিল এক মারুতি ওমনি চালকও। সে উঠছিল পাহাড়ে, তার চোখেমুখে দেখেছিলাম ভয়ের নিদারুণ ভ্রূকুটি। আর আমার মন সমানে ছেয়ে ছিল কথা রাখতে না পারার তিক্ত অনুশোচনায়, মাকে যে কথা দিয়ে এসেছিলাম উঠব না পাহাড়ে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *