পুজোয় অদূরে ৭ / পটনা-গয়া-রাজগীর-নালন্দা

Rajgir Glass Bridge

বেড়ানোর কথা ভাবলে বিহার খুব একটা মাথায় আসে না। অথচ এই রাজ্যের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে ইতিহাস। বুদ্ধদেব, মহাবীর, অজাতশত্রু, বিম্বিসার, চন্দ্রগুপ্ত, অশোক যে রাজ্যের সঙ্গে জড়িয়ে, যে রাজ্যে বিশ্বের প্রথম রিপাবলিকের পত্তন হয়, শরদিন্দুর ঐতিহাসিক উপন্যাসের ভিত্তি যে রাজ্য, সেই রাজ্যকে কি পর্যটন-মানচিত্রে ব্রাত্য রাখা যায়? আমাদের প্রতিবেশী বিহারে পৌঁছেও যাওয়া যায় সহজে। তাই ভ্রমণঅনলাইন সাজিয়ে দিচ্ছে বিহার ভ্রমণছক। চলুন পুজোর ছুটিতে বেরিয়ে পড়ি, কয়েক দিনের জন্য ঘুরে আসি পটনা-গয়া-রাজগীর-নালন্দা।

ভ্রমণসূচি

প্রথম থেকে তৃতীয় দিন – (দেখুন: পুজোয় অদূরে ৬ / পটনা-বৈশালী)

চতুর্থ দিন – গন্তব্য গয়া। গয়ায় ঘোরাঘুরি।

ট্রেনে গয়া যাওয়া সব থেকে ভালো। পটনা থেকে গয়াগামী অসংখ্য মেমু লোকাল ট্রেন রয়েছে। ঘণ্টা আড়াই সময় লাগে। এ ছাড়া রয়েছে রাঁচিগামী জনশতাব্দী এক্সপ্রেস। ট্রেনটি রোজ সকাল ৬.১০-এ পটনা জংশন স্টেশন থেকে ছেড়ে গয়া পৌঁছোয় ৭:৫৫-এ।

বিষ্ণুপাদ মন্দির, গয়া।

কী দেখবেন গয়ায়

(১) বিষ্ণুপাদ মন্দির – অন্তঃসলিলা ফল্গুর পাড়ে। কারুকার্যময় আট সারি স্তম্ভ, ৩০ মিটার অষ্টকোণী চূড়া। ভিতরে পাথরে বিষ্ণুর পায়ের ছাপ।

(২) পাতালেশ্বর শিব ও অক্ষয়বট – বিষ্ণুপাদ মন্দিরের এক কিমি দূরে ১০০০ সিঁড়ি উঠে ব্রহ্মযোনি পাহাড়, চুড়োয় পাতালেশ্বর শিব আর নিচুতে অক্ষয়বট।

(৩) সূর্য মন্দির – বিষ্ণুপাদ মন্দিরের উত্তরে শোন নদীর তীরে।

(৪) বরাবর গুহা – গয়া থেকে গাড়ি বা বাসে আসতে পারেন, দূরত্ব ৩৭ কিমি। সম্রাট অশোকের সময়ে তৈরি গুহা। সাতটি গুহা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তিন ধরনের গুহা – নাগার্জুনীয় গুহা, পঞ্চপাণ্ডব গুহা ও কুটিরাকার গুহা। গুহার কাছেই আনন্দ সরোবর, সিদ্ধেশ্বর পাহাড়।

পঞ্চম দিন– আজ ঘুরে আসুন বুদ্ধগয়া থেকে, বাসে বা গাড়ি, অটো, টাঙায়। ভারত সেবাশ্রম আশ্রমের কাছে কাছারি চক থেকে শেয়ার অটো পাওয়া যায়।

বোধিবৃক্ষ, বোধগয়া।

কী দেখবেন বুদ্ধগয়ায়

নিরঞ্জনা নদীর তীরে উরুবিল্ব গ্রামে পিপুল গাছের নীচে বোধি লাভ করে গৌতম হলেন বুদ্ধদেব। সেই নিরঞ্জনা আজ ফল্গু, উরুবিল্ব আজ বুদ্ধগয়া আর পিপুল গাছ আজ বোধিবৃক্ষ।

(১) বোধিবৃক্ষ – পাথরে পায়ের ছাপ বুদ্ধের।

(২) মহাবোধি মন্দির – ৬০ ফুট প্রশস্ত, ১৮০ ফুট উঁচু পিরামিডধর্মী চুড়োওয়ালা দ্বিতল মন্দির। ভূমিস্পর্শ মুদ্রায় ৮০ ফুটের বুদ্ধমূর্তি। প্রবেশফটক বৌদ্ধধারায় দক্ষিণ ভারতীয় শৈলীতে তৈরি। পণ্ডিতদের মতে, সম্রাট অশোকের দানের ১ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রায় উপগুপ্তের হাতে তৈরি এই মন্দির। বহু বার নানা কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে এই মন্দির, আবার সংস্কার হয়েছে। মন্দিরের উত্তরে চক্রমাণা (বুদ্ধের ধ্যানস্থান), ঘেরা প্রাঙ্গণে অনিমেষলোচন চৈত্য (এক সপ্তাহ ঠায় দাঁড়িয়ে বুদ্ধ পিপুল গাছ অবলোকন করেন), মোহান্তর মনাস্ট্রি, রত্নাগার।

মহাবোধি মন্দির, বোধগয়া।

(৩) সুজাতা মন্দির – মহাবোধির দু’ কিমি পশ্চিমে।

(৪) মুচলিন্ড সরোবর – ৩ কিমি দূরে, নাগরাজ মুচলিন্ড ফণা মেলে ধ্যানস্থ বুদ্ধকে রোদ-ঝড়-বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতেন।

(৫) তিব্বতীয় মনাস্ট্রি – মহাবোধির উত্তর-পশ্চিমে বাজার পেরিয়ে ১৯৩৮-এ তৈরি।

(৬) চিনা বুদ্ধিস্ট মন্দির – অদূরেই ১৯৪৫-এ তৈরি সাদা রঙের মন্দির।

(৭) মিউজিয়াম – চিনা বুদ্ধিস্ট মন্দিরের বিপরীতে, বৌদ্ধ স্থাপত্যের নানা নিদর্শন।

(৮) থাই মনাস্ট্রি – সামনে এগোতেই প্যাগোডাধর্মী মন্দির।

(৯) ভুটান মনাস্ট্রি – আর একটি প্যাগোডাধর্মী মন্দির।

(১০) তিব্বতীয় বুদ্ধ মন্দির

(১১) জাপানি বুদ্ধ মন্দির

সুজাতা মন্দির, বোধগয়া।

এ ছাড়াও মায়ানমার, বাংলাদেশ, লাওস, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনামও মনাস্ট্রি গড়েছে। খোলা আকাশের নীচে ২৫ মিটার উঁচু বুদ্ধমূর্তিটিও পথ চলতে চলতে দেখে নিন।

ষষ্ঠ দিন – চলুন রাজগীর। এবং ওই দিনই ঘুরে নিন নালন্দা, পাওয়াপুরী।  

গয়া থেকে রাজগীরের দূরত্ব ৬০ কিমি। গাড়ি বা বাস পাওয়া যাবে। গয়া থেকে বখতিয়ারপুরগামী প্যাসেঞ্জার স্পেশ্যালেও রাজগীর আসতে পারেন। ট্রেনটি রোজ সকাল ৭.৪০-এ গয়া থেকে ছেড়ে রাজগীর পৌঁছোয় সকাল ১০.৫০-এ।

রাজগির থেকে ১১ কিমি উত্তরে নালন্দা। দেখে নিন বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষ ও সংলগ্ন মিউজিয়াম।

নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষ

এর পর চলুন ১৮ কিমি দূরে পাওয়াপুরী – প্রসিদ্ধ জৈনতীর্থ, ২৪তম জৈন তীর্থঙ্কর মহাবীরের নির্বাণস্থল। দেখুন কমল সরোবরে জলমন্দির। এক কিমি দূরে মহাবীরের প্রথম উপদেশস্থল। রয়েছে জৈন শ্বেতাম্বর মন্দির। আরও অনেক জৈন মন্দির আছে পাওয়াপুরীতে।

সপ্তম ও অষ্টম দিন – রাজগীরে ঘোরাঘুরি।

কী দেখবেন রাজগীরে

রাজগীরের বয়স কত? ৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রাজগীরের নাম ছিল রাজগৃহ। অজাতশত্রু নাম রাখেন গিরিব্রজ। জরাসন্ধেরও রাজধানী ছিল এই রাজগৃহ। রামায়ণেও উল্লেখ আছে রাজগৃহের। বুদ্ধের আগমনে মৌর্যসম্রাট বিম্বিসার দীক্ষা নেন তাঁর কাছে। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ ত্রিপিটক লেখা হয় এই রাজগৃহে। মহাবীর তাঁর প্রথম ধর্মসভা করেন রাজগৃহে। এমনই মাহাত্ম্য এই জায়গার। পাঁচ পাহাড়ে ঘেরা রাজগীর – বৈভার, বিপুল, রত্নগিরি, উদয়গিরি ও শোনগিরি। 

(১) রাজগীর গ্লাস ব্রিজ – বিহারের পর্যটনকে চাগিয়ে তোলার জন্য গত বছরে এই গ্লাস ব্রিজের উদ্বোধন করা হয়। চিনের হাংঝাউ গ্লাস ব্রিজের অনুকরণে নির্মিত এই ব্রিজ ২০০ ফুট লম্বা। এই ব্রিজে এক সঙ্গে ৪০ জন পর্যটক যেতে পারেন। পাঁচ পাহাড়ের কোলে এই ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে।  

(২) হট স্প্রিং – আধুনিক রাজগীরের অন্যতম আকর্ষণ, বেণুবনের দক্ষিণ-পুবে সরস্বতী নদী পেরিয়ে। ঝরনাধারার নীচে ভূ-গর্ভস্থ মন্দিরে মূর্তি হয়েছে গৌতম, ভরদ্বাজ, বিশ্বামিত্র, জমদ্যগ্নি, দুর্বাসা, বশিষ্ঠ ও পরাশর তথা সপ্তঋষির। পাহাড় ঢালে সাতটি ধারায় বেরিয়ে আসছে হট স্প্রিং-এর জল। তারতম্য রয়েছে উষ্ণতার। অদূরে জাপানি প্যাগোডা।

হট স্প্রিং, রাজগীর।

(৩) অজাতশত্রু দুর্গ – রাজগীর স্টেশন থেকে ৬ কিমি দূরে। পাহাড় কেটে পরিখাবৃত দুর্গ। ৫০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে গড়েন বিম্বিসারের পুত্র অজাতশত্রু। ৩২টি প্রবেশদ্বারের মধ্যে একটি আজও অক্ষত।

(৪) জরাসন্ধ কা আখাড়া – এখানেই নাকি ভীম আর জরাসন্ধের যুদ্ধ হয়েছিল।

(৫) জীবকের উদ্যান – বিম্বিসার ও অজাতশত্রুর আমলে জীবক ছিলেন রাজবৈদ্য। বুদ্ধদেবকেও একবার জীবকের কাছে আনা হয়েছিল আঘাতের ক্ষত সারানোর জন্য। সেই জীবকের ডিসপেনসারি ছিল এখানে।  

(৬) বিম্বিসারের জেল – ১.৮ মিটার পুরু দেওয়াল, ১৮.৫৮ বর্গ মিটার জমির ওপর তৈরি জেলে পুত্র অজাতশত্রুর হাতে বন্দি ছিলেন বিম্বিসার।

(৭) বিম্বিসারের খাজাঞ্চিখানা তথা স্বর্ণভাণ্ডার – রাজগীর স্টেশন থেকে ৬ কিমি দূরে।  আকারে অনেকটা গুহার মতো। প্রচলিত বিশ্বাস, এখানে এখনও এক ভাণ্ডারে সোনা লুকোনো আছে। কেউ যদি এখানকার শিলালিপির পাঠোদ্ধার করতে পারেন, তা হলে তাঁর কাছে স্বর্ণভাণ্ডার দরজা খুলে যাবে। 

(৮) মনিয়ার মাঠ – পাহাড়ের নিচুতে সমতলে এক উদ্যানভূমি। এখানে রাজসূয়, অশ্বমেধ যজ্ঞ হত। কিংবদন্তি, এখানেই ভীম ও জরাসন্ধের মধ্যে ২৮ দিনব্যাপী দ্বন্দ্বযুদ্ধ চলে এবং জরাসন্ধের মৃত্যু হয়।

(৯) জয়প্রকাশ নারায়ণ উদ্যান – মনিয়ার মাঠের বিপরীতে।

(১০) শোনভাণ্ডার – উদ্যানের অদূরেই, জরাসন্ধের ধনাগার।

(১১) বেণুবন বিহার – বিম্বিসারের প্রমোদকানন, বুদ্ধও বাস করেছেন এখানে, এখন ডিয়ার পার্ক তথা চিড়িয়াখানা, বেণুবনের জলাশয়ে খেলা করে মাছ।

(১২) বীরায়তন ব্রাহ্মী কলা মন্দিরম – দর্শনী দিয়ে প্রবেশ, দেখুন পুতুলে মহাবীরের জীবন আখ্যান।

(১৩) গৃধকূট পাহাড় – এই পাহাড়ে বসেই শিষ্যদের বাণী দিতেন বুদ্ধদেব।   

বিশ্ব শান্তি স্তূপ, রাজগীর।

(১৪) বিশ্বশান্তি স্তূপ – শহর থেকে ১২ কিমি দূরে রত্নগিরি পাহাড়চুড়োয় জাপানি বৌদ্ধসংঘের তৈরি। গৃধকূট পাহাড় থেকে ৬০০ মিটার বৈদ্যুতিন রোপওয়েতে সাত মিনিট যেতে হয়। হেঁটেও ওঠা যায় শান্তিস্তূপে।

(১৫) ঘোড়াকটোরা ঝিল – পাঁচ পাহাড়ে ঘেরা ঘোড়াকটোরা ঝিলে রয়েছে বুদ্ধের ৭০  ফুট উঁচু প্রতিমূর্তি। এই প্রতিমূর্তি ২০১৮ সালে উন্মোচন করা হয়। পর্যটকরা বোটে করে এসে কাছ থেকে পদ্মাসীন বুদ্ধকে দর্শন করতে পারেনয়। কথিত আছে, মহাভারতের চরিত্র রাজা জরাসন্ধের আস্তাবল নাকি এখানেই ছিল। তাই নাম ঘোড়াকটোরা। পরিবেশ-পর্যটনে উৎসাহ দেওয়ার জন্য হেঁটে, সাইকেলে, রিকশায়, টাঙায় বা ব্যাটারিচালিত গাড়িতে চেপে এই ঝিলে আসতে হয়।    

এ ছাড়াও রাজগীরে রয়েছে বহু জৈন মন্দির, বার্মিজ মন্দির, বুদ্ধ মন্দির, আনন্দময়ী মায়ের আশ্রম, শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ ইত্যাদি।

নবম দিন – ফিরুন বাড়ির দিকে।

রাজগীর থেকে চলুন বখতিয়ারপুর জংশন, দূরত্ব ৬০ কিমি। গাড়ি ভাড়া করে আসুন। বখতিয়ারপুর জংশন থেকে ধরুন পটনা-হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেস। সকাল ৬.১০ মিনিটে বখতিয়ারপুর ছেড়ে দুপুর ১.৩৫-এ হাওড়া পৌঁছোয়। রবিবার ওই ট্রেন চলে না। রাতের পটনা-কলকাতা গরিব রথেও আসা যায়। বুধ, শুক্র ও রবিবার রাত ৮.৫৭-য় বখতিয়ারপুর ছেড়ে ভোর ৫.১৫-য় কলকাতা স্টেশনে পৌঁছোয় গরিব রথ। সে ক্ষেত্রে রাজগীর থেকে রাত থাকতে না বেরোলেও চলবে। ট্রেনে বা গাড়ি ভাড়া করে চলে আসতে পারবেন বখতিয়ারপুর।

ঘোড়াকটোরা ঝিলে বুদ্ধের প্রতিমূর্তি।

কোথায় থাকবেন

পটনা, গয়া এবং রাজগীরে বিহার পর্যটন উন্নয়ন নিগমের হোটেল রয়েছে। অনলাইন বুকিং: http://bstdc.bihar.gov.in/। যোগাযোগ করতে পারেন বিহার পর্যটনের কলকাতা অফিসে। ঠিকানা- ২৬বি, ক্যামাক স্ট্রিট, দূরভাষ- ২২৮০৩৩০৪। রয়েছে অনেক বেসরকারি হোটেলও। যোগাযোগ করুন Travelism (ট্রাভেলিজম)-এর সঙ্গে। ফোন: 8276008189।

রাজগীরে রয়েছে বহু হলিডে হোম। সন্ধানের জন্য দেখুন www.holidayhomeindia.com

কী ভাবে ঘুরবেন

(১) পটনা শহরের দ্রষ্টব্য দেখে নিন অটো বা গাড়ি ভাড়া করে।

(২) গয়ায় পৌঁছে সকালের দিকে মন্দির দর্শন করে দুপুরের খাওয়া তাড়াতাড়ি সেরে চলুন বরাবর গুহা।

(৩) রিকশা ভাড়া করে ঘুরে নিতে পারেন বুদ্ধগয়া।

(৪) রাজগীরে অনেক বেসরকারি ট্রাভেল এজেন্সি আছে যারা নালন্দা-পাওয়াপুরী ঘুরিয়ে আনে। বাস বা শেয়ার ট্রেকারে রাজগীর থেকে নালন্দা, নালন্দা থেকে পাওয়াপুরী যাওয়া যায়। তার পর পায়ে পায়ে নালন্দা আর স্থানীয় যানে ঘুরে নেওয়া যায় পাওয়াপুরী। রাজগীর থেকে ভাড়া গাড়ি করে ঘোরার ব্যবস্থা তো আছেই।

(৫) গাড়ি ছাড়াও রাজগীরে ঘোরার জন্য রয়েছে রিকশা অথবা টাঙা।

মহাবীরের নির্বাণস্থল , পাওয়াপুরী।

মনে রাখবেন

(১) ভ্রমণ সংক্ষিপ্ত করতে চাইলে সূচি থেকে গয়া বা রাজগীর বাদ দিয়ে দিতে পারেন। গয়া বাদ দিলে পটনা থেকে ট্রেনে সরাসরি চলুন রাজগীর। পটনা জংশন স্টেশন থেকে সকাল ৭.১৫-এর শ্রমজীবী এক্সপ্রেস, সকাল ৭.২৫-এর রাজগৃহ এক্সপ্রেস অথবা সকাল ৯.৩০ এর প্যাসেঞ্জার স্পেশ্যাল ধরে পৌঁছে যান রাজগীর। শ্রমজীবী এক্সপ্রেস সকাল ১০.২৫, রাজগৃহ এক্সপ্রেস সকাল ১০.৪৫ এবং প্যাসেঞ্জার স্পেশ্যাল দুপুর ১.১৫-য় রাজগীর পৌঁছোয়। তবে ওই দিনই নালন্দা-পাওয়াপুরী ঘুরে আসতে চাইলে সকালের এক্সপ্রেস ট্রেন ধরাই ভালো।

রাজগীর বাদ দিতে চাইলে গয়া থেকে সরাসরি ফিরুন। গয়া থেকে কলকাতা আসার অনেক ট্রেনই আছে। তবে গয়া-হাওড়া এক্সপ্রেসে টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা সব চেয়ে বেশি। এই ট্রেন দুপুর ১২.২০-তে গয়া ছেড়ে ভোর ৩.৫০-এ হাওড়া পৌঁছোয়। এই ট্রেন জামালপুর-ভাগলপুর-রাজমহল-রামপুরহাট ঘুরে আসে বলে এত সময় লাগে।     

(২) পটনায় কুমরাহরের মিউজিয়াম সোমবার ছাড়া সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা।

(৩) পটনা মিউজিয়াম সোমবার ছাড়া সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত খোলা।

(৪) পটনায় সদাকত আশ্রম সোমবার ছাড়া অন্যান্য দিন খোলা। দুপুরের দিকে ঘণ্টা দুই-তিন বন্ধ থাকে। গ্রীষ্ম আর শীতে খোলার সময় কিঞ্চিৎ আলাদা। আগেভাগে জেনে নেবেন।

(৫) বুদ্ধগয়ার মিউজিয়াম শুক্রবার ছাড়া ১০টা-৫টা খোলা।

(৬) বুদ্ধগয়ায় মহাবোধি দর্শনে টিকিট লাগে, ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা এবং দুপুর ২টো থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা।

(৭) রাজগীরের হট স্প্রিং-এ স্নান করতে হলে ভিড় এড়াতে চলুন খুব ভোরে কিংবা সন্ধের পরে।

(৮) রাজগীরের রোপওয়ে চলে সকাল সোয়া ৮টা থেকে দুপুর ১টা, দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৫টা।

(৯) রাজগীরের গ্লাস ব্রিজ সোমবার বাদে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা। 

(১০) ট্রেনের সময় পালটাতে পারে। অবশ্যই দেখে নেবেন erail.in।

আরও পড়তে পারেন

পুজোয় অদূরে ৫ / দেওঘর-মধুপুর-গিরিডি

পুজোয় অদূরে ৪ / শিমুলতলা

পুজোয় অদূরে ৩ / রাঁচি-নেতারহাট-বেতলা

পুজোয় অদূরে ২ / রাঁচি-ম্যাকলাস্কিগঞ্জ

পুজোয় অদূরে ১ / ঘাটশিলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *