চলুন ফুলের উপত্যকায় ৩: মণিপুর-নাগাল্যান্ডের জোকু ভ্যালি

ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: শুরু হয়েছিল উত্তরাখণ্ডের ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’ দিয়ে। ‘চলুন ফুলের উপত্যকা’র দ্বিতীয় পর্বে ছিল ইয়ুমথাং ভ্যালির কথা। আজ তৃতীয় পর্বে মণিপুর-নাগাল্যান্ডের জোকু ভ্যালির কথা।      

ভারতের প্রকৃতিরাজ্যে এ যেন এক লুকোনো মুক্ত, মণিপুর-নাগাল্যান্ড সীমানায় ২৪৫২ মিটার (৮০৪৪ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত। ২৭ বর্গ কিমি জুড়ে ব্যাপ্ত এই উপত্যকায় চারিদিকের পাহাড়গুলো যেন ফুলের চাদরে মোড়া। নানা ধরনের ফুল। তার মধ্যে সব চেয়ে বেশি চোখে পড়ে গোলাপি আর সাদা লিলি। এখানে এক ধরনের লিলি ফোটে, যা আর কোথাও ফোটে না। ভাগ্য ভালো থাকলে সেই জোকু লিলির দেখা পেতে পারেন। অন্যান্য ফুলের উপত্যকার তুলনায় এখানে পর্যটকদের পা পড়ে কম। তাই জোকু ভ্যালিকে বলা যায় প্রশান্তির নিলয়। এই উপত্যকায় উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট আইসো (মাউন্ট তেনিপু), উচ্চতা ২৯৯৪ মিটার (৯৮২২ ফুট)। এটি মণিপুরেরও উচ্চতম শৃঙ্গ।  

যাওয়ার সব চেয়ে ভালো সময়

এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর, ফুলে ফুলে ছেয়ে থাকবে পাহাড়গুলো।

কী ভাবে যাবেন

নাগাল্যান্ড দিয়ে যাওয়াই সুবিধাজনক। বিমানে বা ট্রেনে ডিমাপুর চলুন। সেখান থেকে বাস, ট্যাক্সি বা ভাড়া গাড়িতে চলুন নাগাল্যান্ডের কোহিমা, দূরত্ব ৬৫-৭০ কিমি। দু’ জায়গা দিয়ে জোকু ভ্যালি ঢোকা যায় – জাখামা (কোহিমা থেকে ২০ কিমি) আর বিস্বেমা (কোহিমা থেকে ২৫ কিমি)। জাখামা থেকে জোকু ভ্যালির পথ বেশি চড়াই, তবে সময় লাগে কম। আর বিস্বেমা থেকে জোকু ভ্যালির পথে চড়াই তুলনায় কম। তাই বিস্বেমা দিয়ে গিয়ে জাখামা দিয়ে ফেরা যেতেই পারে।

কোহিমার নেটওয়ার্ক ট্রাভেলস্‌ এওসি বাসস্ট্যান্ড থেকে শেয়ার ভ্যান বা জিপে চলুন বিস্বেমা। বিস্বেমা থেকে ৮ কিমি রাস্তা গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন বা হেঁটেও যেতে পারেন। অল্প চড়াই, হেঁটে ঘণ্টা তিনেক সময় লাগে। গাড়ির রাস্তা যেখানে শেষ সেখানে পাহাড়ের গা বেয়ে খাড়া সিঁড়ি-পথ উঠতে হবে, ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা। এই রাস্তা শেষ হলে শুরু হবে জোকু ভ্যালি। জোকু ভ্যালিতে একটি রেস্ট হাউস আছে। রেস্ট হাউসে পৌঁছোতে ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগবে।

রেস্ট হাউসের খুব কাছেই জাখামা নেমে যাওয়ার পথ, ধাপকাটা। ওই পথে ৪-৫ ঘণ্টা হাঁটলে পৌঁছে যাওয়া যাবে গাড়ির রাস্তায়। গাড়ির রাস্তায় ৩-৪ কিমি হাঁটলে পৌঁছে যাবেন জাখামা। সেখান থেকে শেয়ার ভ্যান বা সুমোয় চলে আসুন কোহিমায়।

আরও পড়ুন: চলুন ফুলের উপত্যকায় ১: উত্তরাখণ্ডের ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স

কোথায় থাকবেন 

এই পথে থাকতে পারেন কোহিমা ও জোকু ভ্যালির রেস্ট হাউসে। কোহিমায় থাকার জন্য বেশ কিছু হোটেল ও হোমস্টে আছে।             

প্রয়োজনীয় পরামর্শ

প্লাস্টিকমুক্ত অঞ্চল। প্রতিজনা ৫০ টাকা করে প্রবেশ ফি দিতে হয়। প্রবেশ ফি সংগ্রহ করা হয় রেস্ট হাউসে। রেস্ট হাউসে ডর্মিটরি ও ঘর আছে। এ ছাড়া ম্যাট্রেস, কম্বল ও বালিশের জন্য আলাদা চার্জ দিয়ে হয়। অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাবারটুকু পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন: চলুন ফুলের উপত্যকায় ২: সিকিমের ইয়ুমথাং ভ্যালি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *