চণ্ডীদাসের প্রেম ও নানুর

shiv temple, nanur
writwik das
ঋত্বিক দাস

বাংলা সাহিত্যে একাধিক চণ্ডীদাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এই একাধিক চণ্ডীদাস নিয়ে আধুনিক পণ্ডিতরা দ্বিধাবিভক্ত। কেউ কেউ বলেন এক চণ্ডীদাস বৈষ্ণবপদাবলির রচয়িতা। আর অন্য চণ্ডীদাস শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের রচয়িতা। এঁদের এক জন বাঁকুড়ার ছাতনার অধিবাসী ছিলেন, আরেক জন বীরভূমের নানুরের। অনেকে আবার বলেন, এই দুই চণ্ডীদাসই এক। বিতর্ক থাক, চণ্ডীদাস সম্পর্কে যে কাহিনি সব চেয়ে বেশি প্রচারিত, সেই কাহিনিই আজ শোনাই, সেই সঙ্গে তাঁর নানুরের কিছু কথা৷

১৩৭০ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন নানোর এবং অধুনা নানুরে চণ্ডীদাসের জন্ম৷ তাঁদের পদবি ছিল ‘বাড়ুজ্জে’ বা ‘বন্দোপাধ্যায়’৷ এই জন্য তাঁকে বড়ু চণ্ডীদাস বলেও ডাকা হয়৷ তাঁর পরিবার খুব দরিদ্র ছিল৷ দারিদ্রের ভারে এক সময় তাঁরা নানুরের ভিটেমাটি ছেড়ে দিয়ে অধুনা বাঁকুড়া জেলার ছাতনা গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন এবং সেখানে পণ্ডিতগিরি করে কিছু অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে দিন অতিবাহিত করতে লাগলেন৷ তাঁর প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল পদ্মজা৷ অভাবের জ্বালায় একদিন পদ্মজা তাঁকে ছেড়ে চলে যান কীর্নাহারের বাপের বাড়িতে৷

basulidevi temple
বাসুলীদেবীর মন্দির।

নিঃসঙ্গ অবস্থায় চণ্ডীদাসও ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন৷ ঘুরে বেড়িয়ে নিজে কবিতা লিখে সেগুলো বিদ্বজনদের শুনিয়ে বেড়াতে থাকেন৷ সারা দিনে যেটুকু হাতে আসে সেইটুকু দিয়ে রাতেরবেলায় একটি মাটির হাঁড়িতে অন্ন ফুটিয়ে আধাপেটা খেয়ে দিন কাটাতে থাকলেন৷ এ ভাবে ঘুরতে ঘুরতে তিনি একদিন চললেন রাজদরবারের পথে৷ রাজা তখন সভায় বসে মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যাস্ত৷ তাঁর কানে এল সুন্দর কণ্ঠে ঝুমুর গানের আওয়াজ৷ রাজা আলোচনায় আর মন লাগাতে পারলেন না৷ কোথা দিয়ে আসছে এত সুরেলা কণ্ঠ, এত সুন্দর ঝুমুরগান কেই-বা গাইছে৷ ভাবতে ভাবতে এক ভিখারিকে তাঁর দরবারের দিকে এগিয়ে আসতে দেখলেন৷ রাজদরবার পাহারায় নিয়োজিত সৈন্যরা সেই ভিখারীকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দিলে স্বয়ং রাজা সৈন্যদের থামিয়ে ভিখারি চণ্ডীদাসকে ভেতরে আসার অনুমতি দিলেন এবং সেই সঙ্গে আবদার করলেন, আরও ঝুমুরগান শুনিয়ে তাঁর মন তৃপ্ত করতে হবে৷ এমন অবস্থায় চণ্ডীদাস ঝোলা থেকে তাঁর লেখা পদ্য ও ঝুমুরগানের একখানি সংকলন বার করে বেশ ক’টি গান রাজামশাইকে শোনালেন৷ রাজামশাই যারপরনাই তৃপ্ত চণ্ডীদাসের গানে৷ তাঁর অবস্থার খবর নিয়ে পুরস্কারস্বরূপ রাজা তাঁকে বাসুলীদেবীর মন্দিরের পুরোহিতপদে নিযুক্ত করলেন এবং মন্দিরসংলগ্ন একটি ঘরে থাকার অধিকার দিলেন৷ চণ্ডীদাস জীবনধারণের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণর পদ রচনায় ব্রতী হলেন এবং বাসুলীদেবীর পূজা করতে লাগলেন৷

দেবী বাসুলী বীণারঞ্জিত সরস্বতীদেবী, যদিও তাঁকে দুর্গাদেবী মনে করে শাক্ত রূপে পূজা করা হয়৷ এই দেবীর পূজা করতে করতে চণ্ডীদাস দেবীর ভক্তিপ্রেমে বাঁধা পড়লেন৷ বাসুলীদেবীর উপাসনাই তাঁর জীবনের মুল অঙ্গ হয়ে উঠল৷ দেবীর পূজা করার পাশাপাশি শ্রীকৃষ্ণের ভক্তিরস মাঝেমধ্যে সৃষ্টি করে মুখে আওড়াতে লাগলেন, সঙ্গে সঙ্গে সেই পদগুলি লিখে ফেলতে থাকলেন৷

এমন চলতে চলতে একদিন তাঁর মনে এক দোটানার উদ্ভব হল – যে অঙ্গ দিয়ে শাক্তের উপাসনা করে চলেছেন সেই অঙ্গ দিয়ে কী করে শ্রীকৃষ্ণের পদ রচনা করবেন৷ দিশেহারা তিনি৷ এমন অবস্থায় এক অমাবস্যার রাতে বাসুলীদেবী তাঁকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে পদ রচনার আদেশ দিলেন৷ দেবীর আদেশ পেয়ে চণ্ডীদাস প্রদীপের টিমটিমে আলোয় বসে মহানন্দে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের পদ রচনা করতে লাগলেন৷

teracotta work in nanur temples.
নানুরে মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজ।

এমন ভাবে দিন কাটতে কাটতে চণ্ডীদাসের জীবনে আবার পরিবর্তন এল৷ বাসুলীদেবীর মন্দিরে একদিন আগমণ ঘটল এক পরমা সুন্দরী যুবতীর৷ অপূর্ব মুখশ্রী তাঁর৷ তিনি রজকিনি রামী৷ পিতৃমাতৃহারা রামী মন্দিরে দেবদাসীর কাজ করতে এলেন৷ মন্দিরের কাজ গুছিয়ে করেন রামী৷ ঠাকুরের কাপড় ধোয়া থেকে ঝাঁট দেওয়া, সবেতেই নিখুঁত৷ একদিন ভোগ বিতরণের সময় রামীর সঙ্গে চণ্ডীদাসের মুখোমুখি সাক্ষাৎ ঘটে৷ প্রথম দর্শনেই রামীর রূপে মুগ্ধ হয়ে যান চণ্ডীদাস, তাঁর মনের প্রেমসাগর যেন উত্তাল হয়ে ওঠে৷

স্ত্রী পদ্মজাকে হারিয়ে একাকী জীবন৷ পদ্মজাকে সে ভাবে সুখ দিতে পারেননি৷ অনেক দিন নারীর শরীরসুখ থেকেও বঞ্চিত৷ এমন অবস্থায় রামীর মুখ চণ্ডীদাসকে মাতোয়ারা করে তোলে৷ আহা্ কী সৌন্দর্য্য রামীর! হিরের দ্যুতির মতো মুখের ঔজ্জ্বল্য৷ বিদ্যুতের ঝলকানির মতো বাহুযুগল, তন্বী শরীর – সব মিলিয়ে চণ্ডীদাসের দু’ নয়নে শুধুই রামীর উপস্থিতি৷ কখনও বা বাসুলীদেবীর সঙ্গে রামীকে গুলিয়ে ফেলছেন আবার কখনও শ্রীরাধিকার সঙ্গে৷ “ইস্ একবার এসে যদি রামী তাঁর কাছে বসে বুকে তাঁর সুন্দর হাতখানি ছোঁয়াতেন”, “যদি কখনও রামীর শরীর স্পর্শ করার মতো সুখ কপালে জুটত”৷ রাতের একাকী বিছানায় শুধুই এমন ভাবনা তাঁর৷

“ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপিয়া আছয়ে যে জন, কেহ না জানয়ে তারে।
প্রেমের আরতি যে জন জানয়ে সেই সে চিনিতে পারে।।”

basulidevi
বাসুলীদেবী।

এ ভাবে এক দিন উঠোন নিকোনোর সময় সুপুরুষ রামীর পথ আগলে দাঁড়ান চণ্ডীদাস এবং রামীকে প্রেম নিবেদন করেন৷ রামী কিঞ্চিৎ লজ্জিত। চণ্ডীদাস তাঁকে আলিঙ্গন করতে অগ্রসর হলেন৷ রামী তখন চণ্ডীদাসকে মনেমনে গ্রহণ করে প্রস্তাব দিলেন – ঠাকুর, তুমি তোমার সব কাম-বাসনা, সর্বশরীর এবং পুরো সম্মতিতে আমাকে গ্রহণ করো, তা হলেই আমি তোমার হতে পারব৷

চণ্ডীদাস এ বার খুশিতে পাগলপারা হয়ে বললেন, আজ থেকে আমার শরীর, এই বাসুলীদেবীর মন্দিরের দায়িত্ব সব তোমার৷ তুমি শুধু আমার৷ তুমি এই একাকী উত্তপ্ত মন ও শরীরকে শান্ত করো৷ চণ্ডীদাসের প্রেম গ্রহণ করলেন রামী৷ সঙ্গে ভয় পেলেন, যদি পাড়ার লোক তাঁদের প্রেমে বাধা দেয়৷ রামী বললেন, “না ঠাকুর, আমাকে ছাড়ো এতে তোমার বিপদ”৷ “আসুক বিপদ, শুধু তুমি আমাকে ভালোবাসো আমি সব সময় তোমার”- চণ্ডীদাসের জবাব৷ “তবে তা-ই হোক, আজ থেকে আর কোনো লোকলজ্জাকে ভয় নয়” – স্পষ্ট উক্তি রামীর৷

“মরম না জানে, মরম বাথানে, এমন আছয়ে যারা।
কাজ নাই সখি, তাদের কথায়, বাহিরে রহুন তারা।
আমার বাহির দুয়ারে কপাট লেগেছে – ভিতর দুয়ার খোলা।”

প্রেমের টানে পদাবলি রচনায় যাতে বাধার সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে সংযত চণ্ডীদাস৷ রামী, বাসুলীদেবী ও কৃষ্ণের পদ – এই তিনটি বিষয় আবর্তিত হতে লাগল চণ্ডীদাসের জীবন৷

বাসুলীদেবীর প্রতি ভক্তি ও রামীর প্রতি প্রেমসুখ, দুয়ে মিলে পরমসুখে এ বার জোর কদমে শ্রীকৃষ্ণ পদাবলি লিখতে লাগলেন চণ্ডীদাস৷ কখনও ভাবের ঘোরে নিজেদের প্রেমকাহিনি স্থান পেল পদাবলির কাব্যে৷ এ ভাবে একদিন সৃষ্টি হল বাংলার প্রথম সাহিত্য শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের৷

আজ যেখানে মাটির ঢিবি অতীতে সেখানে সাঁঝের বেলায় চণ্ডীদাস  ও রামী কীর্তনের আসর বসাতেন যাতে গ্রামের মানুষ তাদের দু’জনের সম্পর্ককে গুরুশিষ্যার মতো করেই দেখেন৷ তাঁদের কীর্তন শুনতে জড়ো হতেন গ্রামের প্রায় সকলেই৷

চণ্ডীদাস ও রামীর মৃত্যু নিয়ে প্রচলিত কাহিনির কথায় আসি। সেই সময় বাংলার পাঠান সুলতান কিরগিজ খাঁ জোর করে বিয়ে করলেন এক হিন্দু কন্যাকে৷ সেই সুলতানের পত্নীও প্রায়ই আসতেন চণ্ডীদাসের কীর্তন শুনতে৷ ধীরে ধীরে সুলতানের সেই স্ত্রীও চণ্ডীদাসের প্রেমে পড়লেন৷ সুলতান তাঁর স্ত্রীর কাছে সব ব্যাপার জানতে চাইলেন৷ চণ্ডীদাসের প্রেমে পড়ার কথা সুলতানের স্ত্রী নিজমুখে স্বীকার করে নিলে কিরগিজ এক সন্ধেবেলা নিজ স্ত্রীকে বাসগৃহে আটকে রেখে চণ্ডীদাসের কীর্তনের আসরে আচমকা গোলাবর্ষণ করেন৷ ঘটনাস্থলেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যান চণ্ডীদাস, রামী-সহ বেশ ক’জন গ্রামবাসী৷ ধ্বংস হয় বাসুলীদেবীর মন্দির৷

that mound in nanur
সেই ঢিবি।

তবে চণ্ডীদাসের মৃত্যু নিয়ে আরেকটি মত প্রচলিত৷ চণ্ডীদাস ও রামির প্রেমকাহিনি গ্রামবাসীরা জানতে পেরে রেগে ফুঁসে ওঠে এক রাতে দু’জনকেই বেধড়ক পিটিয়ে মেরে ফেলে৷ পরে তাঁদের দুজনের মৃতদেহের ওপর মাটি জড়ো করে ঢিবি বানিয়ে দেয়৷

এই সব কাহিনি কতটা বিশ্বাসযোগ্য, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। বিশেষ করে, চণ্ডীদাসের সময় গোলা, বিশ্বাস করা যায় না।

১৭-১৮ শতক নাগাদ এই অঞ্চলের তিলি সম্প্রদায়ের মানুষ মাটি খুঁড়ে বাসুলীদেবীর মূর্তি পুনরুদ্ধার করেন এবং মাটির ঢিবির পাশেই মন্দিরগুলি নির্মাণ করেন৷ পরবর্তীকালে ১৯৪৫ সাল নাগাদ সরকারি ভাবে খনন চালিয়ে অতীত পুনরুদ্ধার করা হয়৷ বর্তমানে বাসুলীদেবীর মন্দির-সহ আরও ১৪টি শিবমন্দির রয়েছে মন্দিরচত্বরে৷ সব ক’টাই চারচালাবিশিষ্ট৷ এর মধ্যে দু’টি শিবমন্দিরে টেরাকোটার সুন্দর কাজ লক্ষ করা যায়৷ মন্দিরদু’টির দেওয়ালে টেরাকোটার কাজে রাধাকৃষ্ণের লীলাকেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷

এ ছাড়া মন্দিরচত্বরের দু’ পাশে চারটি করে শিবমন্দিরে পঙ্খের অতি সুন্দর কারুকাজ দৃশ্যমান৷ বাকি শিবমন্দিরগুলি সাধারণ ইটে তৈরি এবং চারচালা চূড়াবিশিষ্ট৷

narayan mandir,nanur
নারায়ণ মন্দির।

বাসুলীদেবীর মন্দিরের ডান দিকে চারচালার সমতল ছাদবিশিষ্ট মন্দিরটিতে নারায়ণের পূজা হয়৷ আর সামনের ঘরটিতে বিভিন্ন মৃন্ময়ী দেবদেবীর পূজা হয়৷

বাসুলিদেবীর মন্দির সমতল চারচালাবিশিষ্ট, ইটের তৈরি, মন্দিরের মাথায় একটি চূড়া৷ মন্দিরের গর্ভগৃহে চণ্ডীদাস পূজিত দেবীমূর্তি৷ কালো কষ্টিপাথরের দেবীমূর্তি বীণারঞ্জিত হলেও মুলত শাক্তমতে তাঁর পূজা হয়৷ আশ্বিন মাসে শারদোৎসবের সময় পাঁচ দিন ধরে দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়৷ সেই সময় মোষবলিও হয়৷

এই মন্দিরচত্বর থেকে সামান্য দূরে থানার পাশে যে পুকুরটি আছে সেখানেই রামী কাপড় কাচতে যেতেন৷ এখনও পুকুরধারে রক্ষাকালী মন্দিরের এক দিকে রামীর কাপড় কাচার পাটাটি সংরক্ষিত আছে৷

washing stone of Rami
রামীর কাপড় কাচার পাটা।

নানুরে বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে রয়েছে চণ্ডীদাস ও রামীর বড়ো মূর্তি৷ এ ছাড়া নানুরের কাঁথার কাজের খ্যাতি উল্লেখযোগ্য৷ নানুর সফরে সেখানকার মিষ্টির স্বাদ নিতে ভুলবেন না৷

কী ভাবে যাবেন

রেলপথে হাওড়া/শিয়ালদা-রামপুরহাট লাইনে বোলপুর-শান্তিনিকেতন পৌছে সেখান থেকে বাসে বা গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন নানুর, মাত্র ২১ কিলোমিটা৷ বোলপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মুহুর্মুহু বাস যাচ্ছে নানুর গ্রাম হয়ে৷ কলকাতা থেকে সড়কপথ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বর্ধমান, সেখান থেকে মঙ্গলকোট-নতুনহাট হয়ে নানুর।

কোথায় থাকবেন

নানুরে থাকার তেমন জায়গা নেই৷ শান্তিনিকেতন বেড়াতে গিয়ে ঘুরে নিন নানুর। শান্তিনিকেতনে নানা বাজেটের হোটেল আছে। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের রয়েছে শান্তিনিকেতন ট্যুরিস্ট লজ ও রাঙাবিতান ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্স। দু’টোরই অনলাইন বুকিং www.wbtdcl.com। বেসরকারি হোটেলের সন্ধান পাওয়া যাবে goibibo, makemytrip, trivago, booking.com, tripadvisor, yatra.com, cleartrip প্রভৃতি ওয়েবসাইট থেকে।

ছবি: লেখক

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *