জন্ম সার্ধশতবর্ষে হেরিটেজের তকমা পেতে চলেছে কলকাতার গান্ধী ভবন

কলকাতা: স্বাধীনতার প্রাক্কালে এই বাড়িতেই ছিলেন মহাত্মা গান্ধী। আগামী ২ অক্টোবর, মহাত্মা গান্ধীর জন্ম সার্ধশতবর্ষে হেরিটেজের তকমা পেতে চলেছে এই বাড়িটি।

দীর্ঘদিন ধরে বাড়িটি অবহেলায় থাকার পর অবশেষে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। এই বাড়িটি দেখভাল করেন পূর্ব কলকাতা গান্ধী স্মারক সমিতি (পিকেজিএসএস)। সমিতির যুগ্ম সচিব পাপড়ি সরকার বলেন, “২ অক্টোবর এই বাড়িটিতে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

গান্ধী যখন এই বাড়িতে আসেন তখন এর নাম ছিল হায়দরি মঞ্জিল। এই বাড়িটি দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের ছিল বলে জানা গিয়েছে,। ২০-এর দশকে গুজরাতের সুরাত থেকে কলকাতায় চলে এসেছিলেন এই সম্প্রদায়ের অসংখ্য মানুষ। মূলত কাজের সন্ধানেই এসেছিলেন তাঁরা। ১৯২৩ সালে এই বাড়িটি কিনে নেয় দাউদিরা।

জানা যায়, ১৯৪৬-এর ভয়াবহ দাঙ্গার পরে এই বাড়ির বাসিন্দারা পালিয়ে অন্যত্র চলে যান। স্বাধীনতা ঠিক আগে আগে এই দাঙ্গার পরিস্থিতি দেখতে কলকাতায় পা রাখেন গান্ধী। পিকেজিএসএসের সভাপতি শঙ্কর সান্যাল বলেন, “৯ আগস্ট ১৯৪৭-এ কলকাতায় পা রাখার পরে তিনি প্রফুল্ল ঘোষের বাড়িতে যান। তত দিন পর্যন্ত কলকাতায় এলে ওই বাড়িতেই উঠতেন তিনি। কিন্তু এর পরে তাঁকে হায়দরি মঞ্জিলে থাকার অনুরোধ করেন সুহরাওয়ার্দি। এই অঞ্চলে দাঙ্গার ছবি ভয়াবহ ছিল। তাই ভাবা হয়েছিল গান্ধীর প্রভাবে সংঘর্ষ থামাবে দাঙ্গাবাজরা।” ১২ আগস্ট থেকে এই বাড়িতে থাকতে শুরু করেন গান্ধী।

তিনি বলেন, “প্রথম প্রথম দাঙ্গা অনেকটা কমলেও, থামেনি। এর পরে ১ সেপ্টেম্বর থেকে আমরণ অনশনে বসলেন গান্ধী। এর ফলে হিন্দু এবং মুসলিম দাঙ্গাবাজরা তাঁর সামনে আত্মসমর্পণ করলেন। থামল দাঙ্গা।”

এই বাড়িটিকে সংরক্ষণ করার চেষ্টা অনেক দিন আগে থেকেই হচ্ছিল। কিন্তু বেসরকারি মালিকানাধীন থাকায় তা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। ২০০৭-এ এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় পূর্ত দফতর।

তবে বাড়িটিকে হেরিটেজ তকমা দিয়ে দিলে রাজ্য সরকারই এখন থেকে এটির দেখভাল করবে। ফলে রক্ষণাবেক্ষণের দুশ্চিন্তা থেকে এখন তাঁরা মুক্ত বলে জানিয়েছে পিকেজিএসএস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *