রক্তপিশাচের সঙ্গে একদিন: চলুন ঘুরে আসা যাক ড্রাকুলা ক্যাসেল

dracula castle

ভ্রমণঅনলাইনডেস্ক: আপনি কি ড্রাকুলার গল্প শুনেছেন? হ্যাঁ, ব্র্যাম স্টোকারের ‘ড্রাকুলা’ উপন্যাসটির কথাই বলছি। সেই ড্রাকুলার প্রাসাদ কিন্তু সত্যিই আছে। রোমানিয়ার ট্রানসিলভানিয়ায় অবস্থিত ব্রান’স ক্যাসেলই ‘ড্রাকুলা ক্যাসেল’ নামে পরিচিত। বলা হয় এই প্রাসাদে ড্রাকুলা থাকতেন (বা এখনও থাকেন!)। এই প্রাসাদ রোমানিয়ার এক আকর্ষণীয় স্থান। ড্রাকুলা উপন্যাসের মুখ্য চরিত্রটি ভ্লাদ তেপেস নামক এক শাসকের অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে, যিনি এই প্রাসাদে থাকতেন, তবে মাত্র দু’ মাস।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই ড্রাকুলা ক্যাসেলে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের লোক ঘুরতে আসেন। বর্তমানে এই প্রাসাদটি একটি মিউজিয়াম। ১২১২ সালে টিউটনিক শৈলীতে যখন এই প্রাসাদ তৈরি হয় তখন সেটি ছিল কাঠের। এখন এটি একটি দুর্গের মতো বিশাল প্রাসাদ এবং এই প্রাসাদের চার পাশের সবুজ বাগান দেখে চোখের শান্তি মেলে। তবে একটি উল্লেখযোগ্য তথ্য হল, ব্র্যাম স্টোকার কিন্তু কখনোই ট্রানসিলভানিয়ায় যাননি। কিন্তু তাঁর গল্পে উল্লেখিত ড্রাকুলা প্রাসাদের সঙ্গে একমাত্র এই প্রাসাদটিই হুবহু মিলে যায়।

dracula castle in full moon
পূর্ণিমা রাতে ড্রাকুলা প্রাসাদ।

এই প্রাসাদটি রোমানিয়ার রানি ম্যারির সরকারি বাসভবন ছিল। ১৯২০ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তিনি এই প্রাসাদে ৫৭টি ঘর নিয়ে থেকেছেন। এক একটা ঘর যেন এক একটা পল্লিভবন। প্রাসাদটির মালিক ছিল ব্রাসোভ মিউনিসিপালিটি। রানি ম্যারি প্রাসাদের পরিবেশ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। মিউনিসিপালিটি প্রাসাদটি দিয়ে দেয় রানিকে। রানি ম্যারির সংগ্রহের অনেক আসবাব ও শিল্পনিদর্শন এখনও এই প্রাসাদে দেখা যায়। এবং এই পাহাড়ের পাদদেশে একটি খোলা মিউজিয়াম আছে যেখানে রোমানিয়ার ঐতিহ্যশালী কৃষিকর্মের নানা নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন গ্রিসে বেড়াতে গেলে যে ১০টি জায়গা অবশ্যই দেখবেন

ড্রাকুলা প্রাসাদটি রহস্যময়ও বটে। একতলার সঙ্গে তিনতলা একটি গোপন সুড়ঙ্গের মাধ্যমে যুক্ত। জরুরি অবস্থায় এই সুড়ঙ্গ ব্যবহৃত হত। এটিকে এসকেপ টানেল বলা হত। যদিও এই সুড়ঙ্গের  কথা ভুলে গিয়েছিলেন সবাই, পরে প্রাসাদ  সংস্কার করার সময় এই গোপন পথটির সন্ধান মেলে। এই পথটি একটি ফায়ারপ্লেস-এর আড়ালে আছে।

আপনার যদি ভূত-প্রেত বা অতি-প্রাকৃত বিষয় আগ্রহ থাকে, তবে আপনি নিশ্চয়ই যাবেন এই ড্রাকুলা প্রাসাদে। আর পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় এই প্রাসাদ দেখলে আপনি বিশ্বাস করতে বাধ্য হবেন যে হয়তো এখানে কোনো এক কালে বাস করত রক্তচোষা ড্রাকুলা বা হয়তো এখনও বাস করে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *