ত্রিযুগীনারায়ণ ছিল কেদারনাথ দর্শন করে ফেরার পথে বুড়ি ছুঁয়ে আসা। এখন সে দিন পালটেছে। ইচ্ছা করলেই একটা রাত কাটিয়ে আসতে পারেন ত্রিযুগীনারায়ণে। সেই ব্যবস্থাই করেছে গাড়োয়াল মণ্ডল বিকাশ নিগম (জিএমভিএন)। অবশ্য কালীকমলীর ধর্মশালা এখানে অনেক দিন ধরেই আছে।
পুরাণের কাহিনি অনুযায়ী, এই ত্রিযুগীনারায়ণেই বিয়ে হয়েছিল হর-পার্বতীর। বিয়ে হয়েছিল অগ্নিকুণ্ডকে ঘিরে নারায়ণকে সাক্ষী রেখে। বিয়ের যজ্ঞের সেই অগ্নিকুণ্ড আজও জ্বলছে। সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর – তিন যুগ ধরে নারায়ণ তথা বিষ্ণুর বাস এখানে। তাই নাম ত্রিযুগীনারায়ণ।
উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় ১৯৮০ মিটার (৬৪৯৭ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত ত্রিযুগীনারায়ণ গ্রাম মন্দিরের জন্য বিখ্যাত। মন্দিরের স্থাপত্যরীতি পুরোপুরিই গাড়োয়াল শৈলীর, কেদারনাথ-বদরীনাথ মন্দিরের মতো। কথিত আছে, শঙ্করাচার্য এই মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরে রয়েছে অষ্টধাতুর চতুর্ভুজ বিষ্ণু। তাঁর সঙ্গে লক্ষ্মী ও সরস্বতী। পদতলে জয় ও বিজয়।
মন্দিরের সামনেই জ্বলছে অগ্নিকুণ্ড। যুগ যুগ ধরে প্রজ্বলিত অগ্নিকুণ্ডের জন্য এই মন্দিরের আর-এক নাম অখণ্ড ধুনি মন্দির। যুগলে (দম্পতি) মন্দির দর্শন করতে গেলে অগ্নিকুণ্ডের সামনে পুজো দেওয়ার রীতি আছে। মন্দিরের একেবারে সামনে আছে ব্রহ্মশিলা। কথিত আছে, এইটিই নাকি হর-পার্বতীর বিবাহস্থল।
মন্দির-চত্বরেই রয়েছে এক অবিরাম জলের উৎস। এর নাম সরস্বতী গঙ্গা। এর জলেই পুষ্ট হচ্ছে কাছাকাছি চারটি কুণ্ড – রুদ্র কুণ্ড, বিষ্ণু কুণ্ড, ব্রহ্মা কুণ্ড এবং সরস্বতী কুণ্ড। রুদ্র কুণ্ড স্নানের জন্য, বিষ্ণু কুণ্ড মার্জনের জন্য, ব্রহ্মা কুণ্ড চুমুক দেওয়ার জন্য আর সরস্বতী কুণ্ড পিণ্ডদানের জন্য।
পথ
কেদারনাথ যাওয়ার পথে শোনপ্রয়াগ থেকে রাস্তা উঠেছে ত্রিযুগীনারায়ণের। মন্দাকিনী ও শোনগঙ্গা নদীর সঙ্গমস্থলে শোনপ্রয়াগ। এখান থেকে ত্রিযুগীনারায়ণ সড়কপথে ১২ কিলোমিটার।
আর কী দেখবেন
মন্দির দেখা ছাড়াও একটা দিন ত্রিযুগীনারায়ণে কাটিয়ে সমগ্র জায়গাটা উপভোগ করুন। ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখুন হিমালয়ের তুষারাচ্ছাদিত শৃঙ্গরাজি।
বুকিং-এর জন্য যোগাযোগ
জিএমভিএন কলকাতা অফিস – উত্তরাখণ্ড ট্যুরিজম, ৭/২সি চক্রবেড়িয়া রোড (সাউথ), ভবানীপুর, কলকাতা ৭০০০২৫। ফোন: ০৩৩-২৪৭৬৫৫৫৫, ৯৮৩১১১০৯৯৯। ইমেল: gmvnkol@gmail.com
অনলাইন বুকিং: https://gmvnonline.com/
আরও পড়তে পারেন
পর্যটনকে নেতিবাচক চোখে দেখবেন না, সংবাদমাধ্যমের কাছে আর্জি ভ্রমণ সংগঠনগুলির
পূর্ব উপকূলের অল্প-চেনা সৈকত: সূর্যলঙ্কা